ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

পাহাড়ে পেঁপে চাষে সফলতা

অপু দত্ত, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০২১
পাহাড়ে পেঁপে চাষে সফলতা

খাগড়াছড়ি: পেঁপে চাষে সফলতা পেয়েছেন খাগড়াছড়ির কৃষকেরা। তেমনি একজন সফল চাষি সুজন চাকমা।

সম্পতি দুই বন্ধুকে নিয়ে প্রায় সাড়ে চার একর জমিজুড়ে শুরু করেছেন পেঁপে চাষ। শুধু তিনি নয়, দেবব্রত চাকমা নামে এক যুবক পেঁপে চাষ করে বিশাল সফলতা পেয়েছেন।

পাহাড়ের মাটি ও আবহাওয়া কৃষি কাজের জন্য খুবই উপযোগী। তাই এই মাটিতে যেকোনো ফসল ফলানো সম্ভব। তবে, যে ফলটি সহজে সারা বছর ফলানো যায় সেটি হচ্ছে পেঁপে। পেঁপে কম সময়ে ও কম খরচে সহজে ফলানো যায় বলে পেঁপে চাষে আগ্রহী হচ্ছেন এই জেলার কৃষকেরা।

তেমনি একজন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কৃষক সুজন চাকমা। দীর্ঘ বছর ধরে বিভিন্ন ফলের বাগান করছেন। সম্প্রতি দুই বন্ধু জয়রাম চাকমা ও কল্পরঞ্জন চাকমাকে নিয়ে সাড়ে চার একর পতিত জমিতে পেঁপে চাষ করছেন।

সুজন চাকমা বলেন, জমির আগাছা পরিষ্কার করা থেকে শুরু করে পেঁপে চারা লাগানো পর্যন্ত প্রায় ১৫ লাখ টাকা খরচ করেছেন। ইতোমধ্যে তারা ৬৫ লাখ টাকার পেঁপে বিক্রি করেছেন। এসব পেঁপে স্থানীয় যাচ্ছে চট্টগ্রাম, ফেনী ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়।

এদিকে চাষিদের দাবি, তাদের বাগানটা সবচেয়ে বড় পেঁপে বাগান।

কল্পরঞ্জন চাকমা বলেন, আমি মূলত মুদি দোকানি। বন্ধুদের পরামর্শে পেঁপে ব্যবসায় নেমেছি। পেঁপে চাষ সত্যিই লাভজনক। এখন আমি চাষবাদের দিকে বেশি মনযোগ দিচ্ছি। পেঁপে গাছে অনেক ফলন হয়। প্রথমে আমরা ৯ লাখ টাকার পেঁপে বিক্রি করেছি। পরবর্তীতে ৫৬ লাখ টাকার চুক্তিতে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বাগান বিক্রি করেছি। লাভের আশায় বাগান করলেও এতটা লাভ হবে ভাবিনি।

খাগড়াছড়িতে মূলত রেডলেডি, রাজশাহী পেঁপে, দেশি জাত ও কিছু অন্যান্য হাইব্রিড চাষ হয়। তবে, অধিকাংশ কৃষকেরা রেডলেডি জাতের পেঁপে বেশি চাষ করেন। তার বাগান দেখতে বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন আসেন।

এদিকে দেবব্রত চাকমা নামে আরো এক যুবক পেঁপে চাষ করে পেয়েছেন সফলতা। ৩০ শতক জমিতে পেঁপে চাষ করে প্রতি সপ্তাহে ৫ থেকে ৮ হাজার টাকার পেঁপে বিক্রি করেন।

খাগড়াছড়ি কৃষি বিভাগের হিসাব মতে, এ বছর প্রায় ৪শ হেক্টর জমিতে পেঁপে চাষ হয়েছে। আর উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে ৬ মেট্রিক টন। খাগড়াছড়িতে প্রায় সাড়ে ৩শ জনের মতো কৃষক পেঁপে চাষ করেন।

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের সদ্য বিদায়ী উপ পরিচালক মো. মর্ত্তুজ আলী বলেন, খাগড়াছড়ি পেঁপে সবজি এবং ফল হিসেবে খাওয়া যায়। গেল বছর ৩৮৬ হেক্টর জমিতে পেঁপে চাষ হয়েছিল। এ বছর তা বেড়ে প্রায় ৪শ হেক্টর জমিতে পেঁপে চাষ হয়েছে। বর্তমানে জেলায় ছোট বড় মিলে তিন থেকে চারশ কৃষক পেঁপে চাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত। দিনে দিনে পেঁপে চাষ বাড়বে বলে আমার বিশ্বাস।

পেঁপে চাষের জন্য যদি আরো উন্নত প্রশিক্ষণ দিয়ে, যদি বেকার যুবকদের পেঁপে চাষে আগ্রহী করা যায়। তাহলে বেকার সমস্যা সমাধানসহ পেঁপে চাষ হয়ে উঠতে পারে অর্থনৈতি উন্নয়নের অন্যতম ফসল।

বাংলাদেশ সময়: ০৭০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০২১
এডি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।