সিরাজগঞ্জ: রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে (রবি) ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কাটার ঘটনার ২১ দিন পর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিটি।
বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে অভিযুক্ত শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের বক্তব্য ছাড়াই রবির রেজিস্ট্রার সোহরাব আলীর কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।
রবির ট্রেজারার (উপাচার্য’র অতিরিক্ত দায়িত্ব) আব্দুল লতিফ এসব তথ্য নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে বলেন, সন্ধ্যার কিছুটা আগে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিটি। শুক্রবার (২২ অক্টোবর) সিন্ডিকেট মিটিং রয়েছে। ওই মিটিংয়ে প্রতিবেদনটি ওপেন করা হবে এবং অভিযুক্ত শিক্ষিকার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তদন্ত কমিটির প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র অধ্যায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান লায়লা ফেরদৌস হিমেল বলেন, এক সপ্তাহের সময় দিয়ে গত সেপ্টেম্বর মাসের ৩০ তারিখে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নির্ধারিত সাত দিনের মধ্যেই আমাদের তদন্তের কাজ শেষ হয়। শুধুমাত্র অভিযুক্ত শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের সাক্ষাতের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। তিনি বার বার ই-মেইলে সময়ের আবেদন করেন। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুই সপ্তাহ সময় দেওয়া হলেও তিনি তদন্ত কমিটির সামনে আসেননি। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার মধ্যে তার আসার কথা ছিল। বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরও তিনি না আসায় তার বক্তব্য ছাড়াই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। ১৬ কার্যদিবস পরে এ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হলো।
উল্লেখ্য, গত ২৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার হলে প্রবেশের সময় ১৪ জন শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেন বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন। অপমান সহ্য করতে না পেরে পরের দিন ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে নাজমুল হাসান তুহিন এক ছাত্র অতিমাত্রায় ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে ২৮ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা সব পরীক্ষা বর্জন করে একাডেমিক এবং প্রশাসনিক ভবনে তাল ঝুলিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ করে। ওইদিন রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান, সহকারী প্রক্টর ও সিন্ডিকেট সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন। ঘটনার তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়।
এদিকে, ওই শিক্ষিকার স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে গত ২৯ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে আমরণ অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। অবশেষে এ অচলাবস্থা নিরসনে ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে সিন্ডিকেট মিটিং শেষে শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনকে সাময়িক বরখাস্ত, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পরীক্ষা স্থগিত এবং একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য ঘোষণা করা হয়। এর পরও প্রশাসনিক ভবনে ভিসিসহ শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে আন্দোলন চালিয়ে যান শিক্ষকার্থীরা। শনিবার ০২ অক্টোবর দুপুরে শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসে অবরুদ্ধ প্রশাসনিক ভবন খুলে দেন তারা।
** চুল কাটা: শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা?
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০২১
এসআরএস