ঢাকা, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্তদের মনোবল ফেরাতে চায় সরকার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০২১
সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্তদের মনোবল ফেরাতে চায় সরকার

ঢাকা: সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মনোবল ফেরাতে উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) সচিবালয়ে এক সভা শেষে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান।

তিনি বলেন, সভায় সাম্প্রতিক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত দেবালয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি ও হতাহতদের পুনর্বাসন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।  

প্রতিমন্ত্রী বলেন, মৌলবাদীদের দ্বারা সংগঠিত পূর্বপরিকল্পিত এই সহিংসতায় হিন্দু ধর্মীয় ব্যক্তিদের মনোবল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রথমে তাদের মনোবল ফিরিয়ে আনার জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। এমন উদ্যোগ নিতে হবে যাতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মনোবল দ্রুত ফিরে আসে। এজন্য স্থানীয় প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন ও নেতৃবৃন্দকে উদ্যোগ নিতে হবে।

কেন্দ্রীয়ভাবে হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট, কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন কমিটি, ঢাকা মহানগর পূজা উদযাপন কমিটি, ইসকন, বিভিন্ন পূজা উদযাপন কমিটির প্রধান এবং বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা সভার আয়োজন করবেন বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে প্রশাসন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের নিয়ে সম্প্রীতি বিষয়ে দ্রুত আলোচনা সভার আয়োজন করবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত মন্দির, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি এবং হতাহতদের তালিকা সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে হবে।

এসব ঘটনায় দায়ের মামলা দ্রুত বিচার আইনে বিচার করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী।

এক প্রশ্নের জবাবে ফরিদুল হক খান বলেন, কেউ যদি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে, সে আমার দলের হোক আর যেই হোক, আমি মনে করি মানুষ হিসেবে তার রূপ না, তার রূপ হলো পশু সমতুল্য। পশু সমতুল্য যারা এসব কর্ম করেন তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সবার ঐকমত্যে পৌঁছাতে হবে এবং আগামী দিনে তাদের আইনের আওতায় এনে শান্তির ব্যবস্থা নিতে হবে। যারা এ অপকর্ম করেছেন তাদের শাস্তি এমন হওয়া উচিত যাতে তাদের শাস্তি দেখে পরবর্তীকে কেউ এমন কাজ করার সাহস না পায়। কাউকে আর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, হাঙ্গামা করার সুযোগ দেওয়া হবে না। দল ও প্রশাসন ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে পারলে কেউ এ ধরনের কাজ করতে পারবে না।

সহিংসতায় জড়িত কারা—এমন প্রশ্নের জবাবে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান কেউ জড়িত নয়। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে দাঙ্গা, হাঙ্গামা করার জন্য যারা চেষ্টা করে তারা কোনো দলের হতে পারে না, তারা মানুষ হতে পারে না, তারা অমানুষ।

ফরিদুল হক খান আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা হাতে এসেছে। কিন্তু কেউ যেন বাদ না পড়ে। কেউ যাতে আড়ালে না থেকে যায়। সরকারি উদ্যোগে আমরা তাদের জন্য যদি করণীয় থাকে, তা করার চেষ্টা করব। যে তালিকা এসেছে সেখানে ত্রুটি আছে। প্রকৃত তালিকা নেব।

সভায় পঙ্গজ দেবনাথ বলেন, সভার অভিমত হচ্ছে দ্রুত বিচার করা। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে কত টাকা লাগতে পারে তা নির্ধারণ করা।

পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য বলেন, উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তি নানাভাবে চেষ্টা করছে নির্বাচনের আগে যাতে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার করা হয়, তারা ভীত হয়ে দেশ ত্যাগ করে। আমরা আজ দৃঢ়কণ্ঠে বলছি, কোনো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, কোনো হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান তারা নিজের দেশ ছেড়ে কখনোই যাবে না। জাতির কাছে আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন ভীত না হয়, সরকার কঠোর অবস্থান নিয়ে এই অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে ব্যবস্থা নেবে এবং তাদের যে ক্ষতি হয়েছে প্রধানমন্ত্রী তাদের আর্থিকভাবে সহযোগিতা করবেন। তারা যেন সামান্য এই ঘটনার পরে দেশত্যাগ করার মতো কোনো হতাশার মধ্যে না পড়েন। এ দেশ আমাদের, সব বাধাবিপত্তি প্রতিহত করেই আমরা এ দেশে ঐক্যবদ্ধভাবে থাকবো।

সভায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী বীরেন সিকদার, সংসদ সদস্য মনোরঞ্জনশীল গোপাল উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০২১
এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।