ঢাকা, রবিবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

কোলাহলমুখর ফেরিঘাট এখন বিরানভূমি!

ইমতিয়াজ আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০২১
কোলাহলমুখর ফেরিঘাট এখন বিরানভূমি!

মাদারীপুর: বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটের বাংলাবাজার ফেরিঘাট। ফেরি চলাচলের সুবিধার্থে বাংলাবাজার ঘাটে রয়েছে ৪টি ঘাট।

পর্যাপ্ত জায়গা এবং দূরত্বে প্রতিটি ফেরিঘাট নির্মিত।

এর মধ্যে রো রো, ভিআইপি, ডাম্প ও ছোট ফেরিগুলো ভিন্ন ভিন্ন ঘাট ব্যবহার করতো। এই ঘাটকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে অসংখ্য দোকানপাট, খাবার হোটেল।  

ঘাট বন্ধ থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে দোকানের বেচাকেনা। সে কারণে অনেক ব্যবসায়ী বন্ধ করে দিয়েছেন তাদের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানও। কোলাহল মুখর ফেরিঘাটগুলো এখন যেন বিরানভূমি!

সরেজিমনে শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) সকালে শিবচরের বাংলাবাজার ফেরিঘাট ঘুরে দেখা গেছে এই চিত্র।

ঘাট ঘুরে দেখা যায়, ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় ঘাট জনমানবশূন্য। পরিত্যক্ত অবস্থার মতো পরে আছে ফেরির পন্টুন। ৪ নম্বর ফেরিঘাটে একটি কে-টাইপ ফেরি এবং পাশেই ডাম্প ফেরি ও আইটি জাহাজ নোঙর করে রাখা। ঘাটে থাকা খাবার হোটেল, চায়ের দোকানগুলো বন্ধ। দুই, একটি দোকান খোলা থাকলেও ক্রেতাশূন্য। কয়েকজন দোকানিরা দোকান বন্ধ রেখে অলস সময় কাটাচ্ছেন। অনেকেই আবার সরিয়ে নিয়েছেন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, কেউ আবার ভাসমান বিক্রেতা হিসেবে হকারি করছেন।

মো. রাসেল নামে এক চা দোকানি বলেন, প্রায় তিন মাস ধরে অচল হয়ে আছে ফেরিঘাট। এর মধ্যে একটানা ৪৭ দিন পর্যন্ত বন্ধ ছিল ফেরি চলাচল। এখনো বন্ধ। ফেরি বন্ধ থাকায় ঘাট মরে গেছে। লোকজন নাই। ব্যবসা বন্ধ। বেশিরভাগ দোকানি ব্যবসা বন্ধ করে চলে গেছে। অনেক দোকানের পণ্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। হোটেল মালিকরা অনেক আগেই ঘাট ছেড়েছেন। অনেকে বেকার, অনেকে ভিন্ন দিকে চলে গেছে। আমাদের মতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কিছু করার নাই। সংসার চালানো দায় এখন।

মাসুদ নামে অপর এক দোকানি বলেন, ঘাট বন্ধ হওয়ার পর এই ঘাটে লোকজন আসাও বন্ধ। দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছি। ফেরি আর চলবে বলে মনে হয় না। নদীতে পানি কমে গেছে, এখন স্রোত থাকার কথা নয়। অথচ ফেরি দিনের পর দিন কেন বন্ধ তা বোঝার সাধ্য আমাদের নাই।

বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা নদীতে স্রোতের তীব্রতার কারণে ফেরি চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। বেশ কয়েকবার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুর পিলারে ধাক্কাও লাগে। পরে দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য গত ১৮ আগস্ট থেকে ফেরি চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হয়। টানা ৪৭ দিন বন্ধ থাকার পর পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলে ৫ অক্টোবর ভোর থেকে সীমিত আকারে ফেরি চলাচল শুরু হয়। টানা ছয় দিন চলার পর স্রোত বেড়ে গেলে আবারো বন্ধ হয়ে যায় ফেরি চলাচল। এরপর দুই দফা ট্রায়াল দেওয়া হলেও ফেরি চলাচল বন্ধই রয়েছে।

বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন আহমেদ জানান, ফেরি চলাচলের কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। এই নৌরুট ব্যবহারকারীদের বিকল্প রুট ব্যবহারের জন্য বলা হয়েছে। ঘাট বন্ধ থাকায় স্বাভাবিকভাবেই ঘাটে গড়ে ওঠা দোকানগুলো বন্ধ হয়ে গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।