ঢাকা, শনিবার, ৪ মাঘ ১৪৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

ব্যবসায়ী নাজমুল হত্যার নেপথ্যে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০২১
ব্যবসায়ী নাজমুল হত্যার নেপথ্যে বাবর মিয়া, রাসেল মিয়া, মাসুদ মিয়া ও মরদিছ মিয়া (বাঁ থেকে)

ঢাকা: মৌলভীবাজারের চৈত্রঘাট বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নাজমুল হাসানকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় অন্যতম আসামিসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

গ্রেফতাররা হলেন- বাবর মিয়া (২৮), রাসেল মিয়া (৩২), মাসুদ মিয়া (৪২) ও মরদিছ মিয়া (৬৮)।

র‌্যাব জানায়, ভুক্তভোগী নাজমুল হাসানের পরিবারের সঙ্গে একই এলাকার বাসিন্দা আব্দুল আহাদ নাইছ মিয়ার সন্তানদের দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক ও ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব ছিল। নাজমুলের দলের হামলায় ইতোপূর্বে নাইছ মিয়ার ছেলে জুয়েলের পা ভেঙে যায়। এই দুই পরিবারের মধ্যে আসন্ন ইউপি নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থিতা নিয়েও দ্বন্দ্ব ছিল। বিভিন্ন দ্বন্দ্বের জেরে নাজমুল হাসানকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) ভোরে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও মৌলভিবাজার থেকে হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতাররা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি জানান, ৩১ অক্টোবর দুপুরে কমলগঞ্জের চৈত্রঘাট বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নাজমুল হাসানকে (৩৬) নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নাজমুল হাসানের বড় ভাই শামসুল হক কমলগঞ্জ থানায় ১৪ জন আসামি ও পাঁচজন অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি তদন্তের ধারাবাহিকতায় চারজনকে গ্রেফতার করা হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পারিবারিক ও ব্যবসায়িক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে ভুক্তভোগী নাজমুল হাসানের সঙ্গে একই এলাকার আব্দুল আহাদ নাইছ মিয়ার সন্তানদের দ্বন্দ্ব চলছিল। এরই একপর্যায়ে নাজমুল হাসান দলের হামলায় আব্দুল আহাদ নাইছ মিয়ার সন্তান জুয়েলের পা ভেঙে যায় বলে জানা যায়। গ্রেফতার বাবর-রাসেল ও আসামি তোফায়েল ও জুয়েল পরস্পর সহোদর।

এছাড়া মামলার ১ নম্বর আসামি তোফাজ্জলের শ্বশুরের সঙ্গে ভুক্তভোগীর ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব ও মারামারি হয়। ভুক্তভোগী ও আসামিদের আসন্ন ইউপি নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থিতা নিয়েও দ্বন্দ্ব ছিল বলে জানা গেছে। মূলত পূর্ব শত্রুতার জেরে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, নিজ ভাইয়ের ওপর হামলার প্রতিশোধ নিতে চার ভাই ভিকটিমের প্রতিপক্ষদের যোগসাজশে এই হামলার পরিকল্পনা করেন। হত্যাকাণ্ডের মূল নেতৃত্বে থাকে তোফায়েল। ৩০ অক্টোবর তোফায়েল ও বাবর ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করেন। হত্যাকাণ্ডের দিন আসামিরা মৌলভীবাজারের জগন্নাথপুরে একত্রিত হয়ে মাইক্রোবাস ভাড়া করে চৈত্রঘাট বাজারের উদ্দেশে রওনা দেয়। এ সময় ভুক্তভোগী নাজমুল হাসান চৈত্রঘাট বাজার থেকে বাসায় যাওয়ার পথে হত্যাকারীরা মাইক্রোবাস থেকে নেমে রামদা, চাইনিজ কুড়াল ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যায়।

গ্রেফতার বাবর, রাসেল ও মাসুদ অন্য আসামিদের সঙ্গে মাইক্রোবাস থেকে নেমে নৃশংসভাবে ভুক্তভোগীকে কোপাতে থাকে। এছাড়া মরদিছ ঘটনাস্থলের আসে পাশে ওয়াচম্যানের দায়িত্ব পালন করে।  

নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০২১
পিএম/জেএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।