সিলেট: সিলেটের কলেজ ছাত্র আরিফুল ইসলাম রাহাত হত্যার প্রধান আসামি সামসুদ্দোহা সাদি কারাগারে রয়েছেন। তাকে কুষ্টিয়া থেকে গ্রেফতার দেখায় সিআইডি।
বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) আটকের ভয়ে সিলেটের আদালতে আত্মসমর্পন করেন পলাতক দুই আসামির একজন ওহিদুর রহমান সানি। খবর পেয়ে রাহাত হত্যায় তদন্তকারী টিম সিআইডি পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে।
হত্যাকাণ্ডের তদন্তে থাকা সিআইডির উপ-পরিদর্শক (এসআই) রিপন দে সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আত্মসমর্পণ করা আসামির পাঁচদিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। রোববার (৭ নভেম্বর) রিমান্ডের শুনানি হতে পারে।
এদিকে, আরিফুল ইসলাম রাহাত হত্যার পলাতক দুই আসামিকে গ্রেফতারে বিভিন্নস্থানে অভিযান চালায় সিআইডি। তদন্তকারী কর্মকর্তার নেতৃত্বে টিমের সদস্যরা পলাতকদের ধরতে অসংখ্য স্থানে অভিযান চালায়। সর্বশেষ বুধবার রাতে ওহিদুর রহমান সানির অবস্থান শতভাগ নিশ্চিত হয়ে অভিযান চালায় সিআইডি। কিন্তু অভিযানের বিষয়ে টের পেয়ে পালিয়ে যায় সানি। আর গ্রেফতার এড়াতে ওহিদুর রহমান সানি আদালতে আত্মসমর্পন করেছে। এখনো এজাহার নামীয় ওপর আসামি তানভীর পলাতক রয়েছেন। তাকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রাখা হয়েছে।
গত ২১ অক্টোবর সিলেটে দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজ গেটের ভেতরে খুন হন উপজেলার পুরাতন তেতলি এলাকার সুরমান আলীর ছেলে ও দক্ষিণ সুরমা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র আরিফুল ইসলাম রাহাত (১৮)। সেদিন দুপুরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে চাচাতো ভাই আশরাফুল ইসলাম রাফিকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে যান রাহাত। সেখানে মোবাইল ফোনে বন্ধুদের না পেয়ে সোয়া ১২টার দিকে কোচিং সেন্টারে যাওয়ার জন্য রওয়ানা দেন।
কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে আসার সময় প্রধান ফটকের ভেতরে থাকা অবস্থায় আরেকটি মোটরসাইকেলে করে এসে অতর্কিতভাবে রাহাতের উরুতে ছুরিকাঘাত করেন ছাত্রলীগের কর্মী সামসুদ্দোহা সাদি ও তার সহযোগীরা। পরে রাহাতকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টাকালে পথে তার মৃত্যু হয়। নিহত রাহাতও ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন।
ঘটনার একদিন পর (২৩ অক্টোবর) রাহাতের চাচা শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে দক্ষিণ সুরমা থানায় সাদিসহ তিনজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৬/৭ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামি হিসেবে পশ্চিমপাড়া গ্রামের জামাল মিয়ার ছেলে তানভির এবং আহমদপুর গ্রামের মৃত গৌছ মিয়ার ছেলে সানির নাম উল্লেখ করা হয়।
এরপর গত ২৬ অক্টোবর কুষ্টিয়া থেকে সাদিকে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। দ্রুততম সময়ে আসামিকে গ্রেফতারে সফল হওয়ায় মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সংস্থাটি। পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে দক্ষিণ সুরমা থানা থেকে মামলার ডকেট হস্তান্তর করা হয় সিআইডির হাতে। ২৯ অক্টোবর সাদি নিজেকে জড়িয়ে আদালতে স্বীকারোক্তি দেন। আদালতের বিচারক জবানবন্দি গ্রহণের পর তাকে কারাগারে পাঠান। বর্তমানে সাদি ও সানি কারাগারে রয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০২১
এনইউ/এমআরএ