মেহেরপুর: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাথুলী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের লক্ষ্মীনারায়ণপুর ধলা (মাইলমারী-ধলা) গ্রামে নির্বাচনী সহিংসতায় দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় সংঘর্ষের ঘটনায় পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে গ্রামটি।
গ্রামের মধ্যে এখন পুলিশ, র্যাব, সিআইডিসহ আইনর্শৃংখলা বাহিনীর বিপুল পরিমাণ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে সাবেক মেম্বর ও গাংনী উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক আতিয়ার রহমানের বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ দেশীয় ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করেছে গাংনী থানা পুলিশ ও র্যাব-৬ গাংনী ক্যাম্পের সদস্যরা।
উদ্ধার করা ধারালো অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে বল্লম-৫ টি, রামদা ৪ টি, হাসুয়া ৭টি, দা -৩ টি, টেটা ২ টি, শাবল ১ টিসহ অন্যান্য ধারালো অস্ত্র।
গাংনী থানার ওসি বজলুর রহমান ও র্যাব-৬ গাংনী ক্যাম্পের কমান্ডার এএসপি তারেক আমান বান্না এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়া অভিযান চালিয়ে লালন হোসেন, প্রধান আসিামী আতিয়ার রহমানের ভাই মহব্বত আলী, লাভলু হক, হিসাব উদ্দীন, আক্তার হোসেন, অঅক্তারুল ইসলাম, সুমন হোসেন, কিরণ হোসেন, চন্দন আলী, বরিশালের রিদওয়ান হোসেনকে আটক করে থানায় নিয়েছেন পুলিশ।
গাংনী থানার ওসি বজলুর রহমান জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রাথমিকভাবে এদের নিয়ে আসা হয়েছে। যাছাই বাছাই শেষে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অপু সরোয়ার, র্যাব-৬ গাংনী ক্যাম্পের কমান্ডার এএসপি তারেক আমান বান্না, গাংনী থানার ওসি বজলুর রহমানসহ র্যাব ও পুলিশের বিপুল সদস্য উপস্থিত রয়েছেন।
এদিকে নিহত সাহাদুল ইসলাম ও জাহারুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। আহতদের মধ্যে জাহারুল ইসলামের স্ত্রী শেফালি খাতুনের অবস্থাও আশংকাজনক বলে জানিয়েছেন নিহতের বোন রেকসোনা খাতুন।
রেকসোনা খাতুন জানান, সকালের দিকে আমার ভাই আজমাইন হোসেন টুটুল পশ্চিমপাড়া এলাকায় ভোট চাইতে গিয়েছিলেন। ভোট চেয়ে ফেরার সময় প্রতিপক্ষ মেম্বর প্রার্থী আতিয়ার রহমানসহ তার ভাই মহব্বত আলীর নেতৃত্বে আরও কয়েকজন ধরে নিয়ে মাঠের মধ্যে নিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় তারা আজমাইন হোসেন টুটুলকে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করেন।
খবর পেয়ে অপর ভাই সাহাদুল ইসলাম ও জাহারুল ইসলাম তাকে বাঁচাতে যায়। সেখানেই জাহারুল ইসলাম ও সাহাদুল ইসলামকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। তাদের উদ্ধার করতে গেলে আরও ১৫-২০ জনকে তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে।
আতিয়ার রহমানের নেতৃত্বে নিহতদের অপর ভাই এনামুল ইসলাম নইলুকে ২০১৭ সালের ১৭ জুলাই মাইলমারী গ্রামের রাস্তার ওপর রামদা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এছাড়া ২০০৯ সালে অপর ভাই সেন্টু হোসেনকে শালিস বৈঠক চলাকালে কুপিয়ে হত্যা করে। মেম্বর প্রার্থী হলে আজমাইন হোসেন টুটুলকে ও হত্যা করার আগাম হুমকি দিয়েছিলেন আতিয়ার রহমান।
গাংনী থানার ওসি বজলুর রহমান জানান, গ্রাম এখন শান্ত রয়েছে। গ্রামের মধ্যে আইনশৃংখলা রক্ষা বাহিনীর বিপুল সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া ঘাতকদের আটক করতে পুলিশ ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে।
এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
গাংনীতে নির্বাচনী সহিংসতায় দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা
বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮ , ২০২১
এসআইএস