ঢাকা, শুক্রবার, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২৭ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

কোনো অভিযোগ ছিল না হাসান আজিজুল হকের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২১
কোনো অভিযোগ ছিল না হাসান আজিজুল হকের

রাজশাহী: বয়সের ভারে শরীরটা বিছানায় পড়ে গেলেও মনটা ছিল সজীব। দারুণ গল্প ও আড্ডাবাজ ছিলেন উপমহাদেশের বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক।

বন্ধু, স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া ছিল তার বেশ পছন্দ। মনটা ছিল শিশু সুলভ।  

রাস্তায় বেরোলেই কথা বলতেন একবারে সাধারণ মানুষের সঙ্গে। তার আলাপচারিতা থেকে বাদ যায়নি সাধারণ পথচারীও। সবার সঙ্গে মিশতে ও কথা বলতে পছন্দ করতেন তিনি। অনেকটা প্রাণবন্তভাবে হেসে-খেলেই জীবনের শেষ সময়টা পার করতে চেয়েছিলেন বিশিষ্ট এ কথাসাহিত্যিক। কিন্তু বয়সের কারণে শরীরে বাসা বাধে নানা অসুখ। চিকিৎসাও শুরু হয়। বিছানায় শুয়ে দীর্ঘ একটা সময় চিকিৎসা নেন তিনি। তবে এতকিছুর পরও শেষ দিনগুলোতে কোনো অভিযোগ, অনুযোগ ছিল না বাংলা গল্পের রাজপুত্র খ্যাত এ কথাসাহিত্যিকের।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদের সভাপতি ড. সাজ্জাদ বকুল বাংলানিউজকে বলেন, সোমবার (১৫ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে হাসান আজিজুল হকের বাড়িতে স্যালাইন দিতে একজন নার্স আসেন। নার্স হাতের শিরা খুঁজে পাচ্ছিলেন না। এ সময় ছেলে ইমতিয়াজ হাসান তার পাশেই ছিলেন। রাত সোয়া ৯টার দিকে ছেলে ও নার্সের উপস্থিতিতে তার মৃত্যু হয়।

তিনি আরও বলেন, গত ২১ আগস্ট হাসান আজিজুল হকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকার জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে অধ্যাপক ও ইন্টারনাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ড. আরাফাতের নেতৃত্বে গঠিত মেডিক্যাল টিম তার চিকিৎসা করেন।

দীর্ঘ ১৯ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ৯ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাড়া পান প্রখ্যাত সাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক। এরপর থেকে তিনি বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।

ঢাকা থেকে রাজশাহী আনার পর তার শারীরিক অবস্থা কিছুটা ভালো ছিল। স্বজনদের সঙ্গে কথাবার্তা বলছিলেন। উঠে বসতে পারতেন। খাওয়া-দাওয়াও ঠিকঠাকভাবে করছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ইন্টারনাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ড. আরাফাতের নেতৃত্বে গঠিত মেডিক্যাল টিমের তত্ত্বাবধানে রাজশাহী মহানগরের বিহাসের নিজ বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। তার দেখাশোনা করতে নিয়মিতভাবে একজন নার্স আসতেন।

পরিবারের সদস্যরা সার্বক্ষণিক তার পাশে ছিলেন। কিন্তু এক সপ্তাহ পর তার শারীরিক অবস্থার আবারও অবনতি হয়। এরপর সারাদিন বিছানায় শুয়ে থাকতেন। শেষদিকে খাওয়া-দাওয়া করতে পারছিলেন না। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে শারীরিক অবস্থা বেশ খারাপ ছিল। সবাই মিলে তার সার্বক্ষণিক দেখাশোনা করতেন। যদিও শেষের দিকে খুব একটা কথা বলতে পারছিলেন না। কিন্তু যখন ভালোভাবে কথা বলতেন- তখন তার মুখে কোনো অভিযোগ বা অনুযোগের কথা শোনা যায়নি।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২১
এসএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।