হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জ শহরের টাউন হল রোডে ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের ল্যাব টেকনিশিয়ান সাইফুল ইসলামকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল শহর। খুনির পরিচয় শনাক্ত হলেও গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
হত্যাকারীকে গ্রেফতারে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন আন্দোলনকারী স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। না হলে সিলেট বিভাগজুড়ে স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকিও দেন তারা।
স্থানীয়রা বলছেন, জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে একজন স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা নজিরবিহীন। দ্রুত খুনিকে গ্রেফতার না করলে অপরাধীরা আরও বেপরোয়া হয়ে যাবে। তবে পুলিশ তাকে গ্রেফতারের জন্য হন্যে হয়ে খুঁজছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা।
বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টায় হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) শৈলেন চাকমা বাংলানিউজকে বলেন, হত্যাকারী যুবককে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে শনাক্ত করা হয়েছে। তার পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি হবিগঞ্জেরই বাসিন্দা। পুলিশ ঘটনার মোটিভের দাঁরপ্রান্তে, তবে আসামি সতর্ক হয়ে যাবে ও তদন্তের স্বার্থে এখনই বেশিকিছু বলা যাবে না।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় সাইফুলের সঙ্গে থাকা নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। হত্যাকারী যুবককে দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা এবং মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে বুধবার দুপুরে ঘটনার প্রতিবাদে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। পরে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পুরো শহর প্রদক্ষিণ করেন ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেন।
আন্দোলনে হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) হবিগঞ্জের সভাপতি ডা. মুশফিক হুসেন চৌধুরী ও স্বাস্থ্য বিভাগের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায়সহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন।
বক্তারা বলেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনি গ্রেফতার না হলে বিভাগজুড়ে সকল প্রকার স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ করে দেওয়া হবে। এ বিষয়ে শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে, তারাও আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের ল্যাব টেকনিশিয়ান সাইফুল ইসলাম ও তার সঙ্গে এক নারী শহরের প্রধান সড়ক দিয়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে হাসপাতাল থেকে চৌধুরী বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে টাউন হল রোড এলাকায় এক যুবক রিকশাটির গতিরোধ করে কয়েক হাত লম্বা একটি বাঁশ দিয়ে প্রকাশ্যে সাইফুলকে উপর্যুপরী আঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে ব্যবসায়ীরা আহত সাইফুলকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়।
** হবিগঞ্জে সদর হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর্মীকে পিটিয়ে হত্যা
বাংলাদেশ সময়: ০২২৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২১
আরএ