ঢাকা: আমলাতন্ত্রের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিতে সংসদ সদস্যদের (এমপি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ দলীয় সদস্য নাজিম উদ্দিন আহমেদ। আমলারা এমপিদের মূল্যায়ন করে না অভিযোগ করে তিনি এ বিষয়ে সোচ্চার না হলে তারা (আমলারা) রেহাই দেবে না বলেও মন্তব্য করেছেন।
সোমবার (১৭ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে নাজিম উদ্দিন আহমেদ এ কথা বলেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
নিজের নির্বাচনী এলাকা ময়মনসিংহের গৌরীপুরে অনেক উন্নয়নমূলক কাজের প্রকল্প নেওয়া হলেও তাতে গতি নেই অভিযোগ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচন মুখি হয়েছে। অথচ এলাকার স্কুল-কলেজ ও রাস্তাঘাটের উন্নয়ন কাজ স্থবির হয়ে গেছে। উপজেলা পরিষদ নির্মাণ কাজের ডিজাইন দেওয়া হলেও সেই কাজ হয়নি। সব কাজ একের পর এক বন্ধের পথে রয়েছে। ঠিকাদাররা বলেন টাকা পাইনি, কাজ কোত্থেকে করব। এমপির কোটার ২০ কোটি টাকার কাজও করা হয় না। এ রকম হলে নির্বাচনের সময় মানুষের কাছে জবাব দিতে পারব না। নির্বাচনের আগে, সামনে দুই বছর সময় আছে। এই সময়ের মধ্যে কাজগুলো শেষ করাতে না পারলে নির্বাচনের সময় জনগণের সঙ্গে কথা বলতে পারব না।
এলাকার নির্মাণ প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, মডেল মসজিদ নির্মাণের জন্য তিন বছর আগে জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট করার পরও এর নির্মাণ কাজ হচ্ছে না আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে। এখানে পিডি এক কথা বলেন, ডিসি আরেক কথা বলেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে আরেক কথা বলা হয়। জমিসহ সব ব্যবস্থা থাকলেও কেন যে কাজ শুরু হচ্ছে না? এই প্রকল্পের পিডি সাহেবের মনে হয় স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। তার ভেতরে একটা দুর্বলতা রয়েছে।
আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত এই প্রবীণ এমপি বলেন, সত্য কথা বলতে আমরা যদি সংসদে কথা বলি তাহলে বিষয়টি বিরোধী দলের ফ্লোরের মত হয়ে যায়। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় কিন্তু আমরা ভুগছি। আমলারা যেভাবে কথা বলেন! একটা এমপির মূল্য নেই আমলাদের কাছে। জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে একজন সচিবের কাছে গেলে কোনো মূল্যায়ন নেই। তারা যে আমাদের শ্রদ্ধা করবেন- সেই শ্রদ্ধাবোধ পর্যন্ত নেই। পিয়নও এখন আমাদের দাম দেয় না, শুধু স্যারটাই বলে। এই স্যারটা না বলে পারে না। আমরা আমলাতন্ত্রের হাতে জিম্মি হয়ে গেছি। আমলাতন্ত্রের হাত থেকে বাঁচার জন্য আমাদের সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। সংসদ সদস্যদের বলব, দয়া করে আমলাতন্ত্র থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য আপনারা শক্ত হোন। শক্ত না হলে তারা আমাদের গুরুত্ব দেবে না।
ইউটিউব বন্ধ করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানো হচ্ছে । ইউটিউবে দেখি- খালেদা জিয়া মরে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনা কালকেই ক্ষমতাচ্যুৎ হচ্ছেন। আবার দেখি সেনা প্রধানকে টেনে নামানো হচ্ছে। এই যে অপপ্রচার-প্রপাগান্ডা ইউটিউবে আমরা দেখি.. এগুলো কোত্থেকে আসছে? এভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে- তথ্য মন্ত্রণালয় কী করেন আমরা বুঝি না। কালকে সকালে ঘুম থেকে উঠে শুনবেন শেখ হাসিনা ক্ষমতায় নেই- এই যে কথাগুলো বলা হয়, তাতে আমরা স্তম্ভিত হই। বলা হয় সত্য ঘটনা, এভাবে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হয়। গ্রামের লোকেরা এসব দেখে ভাবেন না জানি বাংলাদেশে কী হচ্ছে! তথ্য মন্ত্রণালয়কে বলব দরকার হলে ইউটিউব বন্ধ করে দেন। ক্রিমিনাল ও স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে আমাদের কোন আপোস হতে পারে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৯ ঘণ্টা, ১৭ জানুয়ারি, ২০২২
এসকে/এমএমজেড