ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

প্রতিবেশীকে হুমকি, উপসচিবের বেতন কমলো

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২২
প্রতিবেশীকে হুমকি, উপসচিবের বেতন কমলো

ঢাকা: সরকারি বাসভবনের প্রতিবেশী অন্যান্য কর্মকর্তাদের হুমকি, মিথ্যা পরিচয়, দুর্ব্যবহারসহ নানান অভিযোগে উপসচিব মো. লোকমান আহমেদকে শাস্তি দিয়েছে সরকার।

আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ‘লঘুদণ্ড’ হিসেবে তিন বছরের জন্য তার বেতন গ্রেডের নিম্নতর ধাপে নামিয়ে আনা হয়েছে।

লোকমান হোসেনকে ‘লঘুদণ্ড’ দিয়ে সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

উপসচিব লোকমানের বিরুদ্ধে নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়ে রাজধানীর রমনা ও মতিঝিল থানায় ১২টি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছিল। এরপর গত বছরের ১৫ এপ্রিল লোকমান আহমেদকে সাময়িক বরখাস্ত করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপসচিব লোকমান আহমেদ বেইলি স্কয়ার অফিসার্স কোয়ার্টারের ১৬/১১ নম্বর বাসায় বসবাস করেন। তার পার্শ্ববর্তী ১৬/১২ নম্বর বাসায় বসবাসকারী ডা. শেখর কুমার মন্ডল ও তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ এবং নিজেকে সচিব বা যুগ্মসচিব বা এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ের মাধ্যমে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮’ অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’ এর অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে বিভাগীয় মামলায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের গত বছরের ১৫ এপ্রিল অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণী জারির মাধ্যমে তাকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।

‘লোকমান আহমেদ গত বছরের ২০ মে লিখিত জবাব দিয়ে ব্যক্তিগত শুনানির আবেদন করলে ২৯ জুন ব্যক্তিগত শুনানি হয়। শুনানিতে দেওয়া মৌখিক বক্তব্য ও লিখিত জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় ন্যায়বিচারের স্বার্থে বিভাগীয় মামলাটি তদন্ত করার জন্য তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। ’

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গত বছরের ১৮ নভেম্বর তদন্তকারী কর্মকর্তার তদন্ত প্রতিবেদনে লোকমান আহমেদের বিরুদ্ধে আনা ‘অসদাচরণ’ এর অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে বলে মতামত দেওয়া হয়।

‘তদন্ত প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র পর্যালোচনা করে লোকমানের বিরুদ্ধে আনীত অসদাচরণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে গুরুদণ্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ বিষয়ে তাকে ফের কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। ’

এতে বলা হয়, গত বছরের ৯ ডিসেম্বর লিখিতভাবে দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর জবাব দেন তিনি। পরে জবাব ও তদন্ত প্রতিবেদনসহ অভিযোগের গুরুত্ব ও প্রাসঙ্গিক বিষয়াদি বিবেচনা করে ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮’ অনুযায়ী তাকে তিন বছরের জন্য বেতন গ্রেডের নিম্নতর ধাপে অবনমিতকরণের লঘুদণ্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, দণ্ডের মেয়াদকালে লোকমান হোসেন ‘জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫’ এর গ্রেড-৫ (টাকা ৪৩০০০-৬৯৮৫০/-) এর ৪৩০০০ টাকার ধাপে বেতন পাবেন। তিনি ভবিষ্যতে এই মেয়াদের কোনো বকেয়া পাবেন না এবং এই মেয়াদ বেতন বৃদ্ধির জন্য গণনা করা যাবে না।

একই সঙ্গে তার সাময়িক বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং সাময়িক বরখাস্তকাল অসাধারণ ছুটি হিসেবে গণ্য হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২২
এমআইএইচ/এজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।