ঢাকা, সোমবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ জুলাই ২০২৪, ২৩ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

খুলনায় জমজ শিশু হত্যাকারী মা নিজেই

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২২
খুলনায় জমজ শিশু হত্যাকারী মা নিজেই

খুলনা: খুলনায় জমজ শিশু হত্যার দায় স্বীকার করেছেন মা কনিজ ফাতেমা কনা।   শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন তিনি।

সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪- এর বিচারক মো. মোস্তাফিজুর রহমান তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

এর আগে, তাকে বিকেল পৌনে ছয়টার দিকে বিচারকের খাস কামরায় নেওয়া হয়। এ তথ্য নিশ্চিত করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও তেরখাদা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এনামুল হক।

তেরখাদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. মাসুম কাজী বলেন, কানিজ ফাতেমা কনা দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের কয়েকদিন আগে স্বামী মাসুম বিল্লাহকে মোবাইলে খুদে বার্তা পাঠায় কনা। শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার জন্য স্বামীকে বলেন। মাসুমের মা অসুস্থ থাকায় বাড়িতে নিতে পারেননি কনাকে। পরে তাকে নেওয়ার কথা বলেছিলেন তিনি। এ নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। তাছাড়া জমজ শিশুর কান্নাকাটিতে তিনি বিরক্ত হতো। ওই দিন রাতে মেয়েদের দুধ খাওয়ানোর পর কান্না থামছিল না। অনেক কষ্ট করে তাদের ঘুম পাড়ানো হয়। রাত আড়াইটার পর ঘুম থেকে জেগে আবারও কান্না শুরু করলে তাদের হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয় তিনি। হত্যার পর কিছুক্ষণ শিশুদের কাছে অবস্থান করে তিনি। ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার সব পরিকল্পনা তিনি করেছিল। পরে পুকুরে ফেলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর দুই ঘণ্টা পর বাচ্চা নিখোঁজের নাটক সাজিয়ে চিৎকার করেন। পাড়া প্রতিবেশিরা ছুটে আসে। মসজিদের মাইকে ঘোষণা করা হয়। পরে ভোর সাড়ে ছয়টার দিকে পুকুরে শিশু দুটির মরদেহ ভেসে থাকতে দেখা যায়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. এনামুল হক জানান, শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কনাসহ বাবা ও মাকে থানায় ডেকে নেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদের সময় শিশু দুটির মা অসংলগ্ন কথা বলতে থাকলে তাদের সন্দেহ আরও বেড়ে যায়। একপর্যায়ে শিশু হত্যার কথাও স্বীকার করেন তিনি। তার সঙ্গে আর কেউ জড়িত না বলে তিনি আরও জানিয়েছেন।

এর আগে, বিকেলে তেরখাদা উপজেলার ছাগলাদাহ তিন নম্বর ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য উজ্জ্বল শেখ বলেন, কনা আমার প্রতিবেশি। শুক্রবার ফজরের আজানের সময় হঠাৎ বাড়ি থেকে চিৎকারের শব্দ পেয়ে বাইরে আসেন। এসে ঘটনাটি শুনে থানায় খবর দেন। পুলিশের সঙ্গে শিশু দুটির খোঁজে তিনিও অংশ নেন। পরে সকালে পুকুরে মরদেহ পাওয়া যায়। কনা যে নিজের শিশুকে হত্যা করবেন তা তিনি বিশ্বাস করতে পারেননি। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়েছেন।

শনিবার দুপুর পৌনে তিনটার দিকে তেরখাদা থানা থেকে ইজিবাইকযোগে কানিজ ফাতেমাকে আদালতে আনা হয়। বিকেল পৌনে ছয়টার দিকে বিচারকের খাস কামরায় নেওয়া হয়। রাত সাড়ে আটটার দিকে তাকে আদালত থেকে কারাগারে পাঠানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১০২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২২
এমআরএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।