ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৮ মে ২০২৪, ১৯ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

মহান একুশের প্রথম প্রহরের প্রতীক্ষা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২২
মহান একুশের প্রথম প্রহরের প্রতীক্ষা

রাজশাহী: রক্ত দিয়ে কেনা ‘বাংলা’ ভাষা। মায়ের ভাষা।

বর্ণমালার ভাষা। আজ পশ্চিমাকাশে লাল সূর্য অস্তমিত হলেই শুরু হবে একুশ গণনার প্রহর।  

রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত ১২টা ১ মিনিটে বিনম্র শ্রদ্ধায় বাঙালি জাতি স্মরণ করবে ভাষা শহীদদের। এ উপলক্ষে জাতির সূর্যালোকিত সন্তানদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুত হচ্ছে বিভাগীয় শহর রাজশাহী। ধুয়ে-মুছে ঝকঝকে করা হচ্ছে শহীদ মিনার। প্রভাত ফেরির জন্য অল্পনার আঁচর পড়েছে ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী কলেজ কম্পাউন্ডে। নতুন রঙে রাঙানো হচ্ছে পুরনো দেয়াল, সিঁড়ি ও শহীদ মিনারের পুরো আঙিনা। চারিদিকেই চলছে ভাষা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানোর শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। সেইসঙ্গে চলছে বাংলার অহঙ্কার ‘মহান একুশ’র প্রথম প্রহরের প্রতীক্ষা।     

রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবদুল খালেক জানান, প্রতিবছরই মহান একুশের প্রথম প্রহরে রাজশাহী কলেজ শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের ঢল নামে। পরদিন প্রভাত ফেরি নিয়ে মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এ শহীদ মিনারে। তাই তারা প্রতিবারের মতো ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন এবারও। নিরপাত্তার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি কলেজের রোভার স্কাউট ও গার্লস গাইডের সদস্যরা শহীদ মিনারে দায়িত্ব পালন করবে। মহান একুশে ফ্রেব্রুয়ারি উপলক্ষে কলেজের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে পুরো কম্পাউন্ডে আল্পনা আঁকছেন শিক্ষার্থীরা। আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস ও মহান একুশ পালনের জন্য তাদের প্রস্তুতি প্রায় শেষ।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (সদর) মো. গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানিয়েছেন, মহান একুশে ফেব্রুয়ারি পালনের জন্য শহীদ মিনার এলাকায় প্রতিবারের মতোই কঠোর নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ ও ডিবি পুলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করবেন। কোথাও যেন কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে ব্যাপারে তারা সতর্ক রয়েছেন। তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙে কেউ কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে আগামী সোমবার মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে দিনভর ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে রাজশাহী জেলা প্রশাসনও। বাঙালি জাতির ইতিহাসে ঐতিহাসিক এ দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনে সোমবার দিবসের শুরুতেই জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরের শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাজশাহীর সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ভবন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে অর্ধনমিতভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে।

সোমবার বেলা ১১টায় রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ‘জাতীয় জীবনে একুশের চেতনা’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।

ভাষা শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এদিন বাদ জোহর রাজশাহী মহানগর ও জেলা সব মসজিদে বিশেষ মোনাজাত করা হবে। এছাড়া সুবিধামতো সময়ে সব মন্দির ও অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। সন্ধ্যায় রাজশাহী তথ্য অধিদপ্তরের ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ভ্রাম্যমাণ সংগীতানুষ্ঠান ও চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। এদিন রাজশাহী মহানগরের সড়কদ্বীপ ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহ বাংলা বর্ণমালা সম্বলিত ফেস্টুন দ্বারা সুসজ্জিত করা হবে।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. আবদুল জলিল জানিয়েছেন, মহান একুশে ফেব্রুয়ারি পালনের জন্য এ বছর ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।  

তিনি বলেন, এরইমধ্যে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। এছাড়া দিবসটি পালনের জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। আগামী সোমবার প্রথম প্রহর থেকেই রাজশাহীতে গভীর শ্রদ্ধায় মহান একুশের কর্মসূচি পালন শুরু হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২২
এসএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।