ঢাকা: রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে লাভবান করতে এর কার্গো সার্ভিস এবং যাত্রীসেবাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের কার্যকর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে এ নির্দেশনা দেন তিনি।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বলাকা ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।
বিমানকে আরও লাভজনক করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চাই আমাদের কার্গো হ্যান্ডেলিং এবং বিমান হ্যান্ডেলিং সবকিছু খুব আন্তর্জাতিক মানের হোক। যাত্রীরা যেন কষ্ট না পায়, সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে, সেটাই আমরা চাই।
আরও দুটি কার্গো বিমান ক্রয়ের পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কার্গো সার্ভিস চালু থাকলেই বিমান আরও লাভজনক হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। কাজেই অন্ততপক্ষে দুটো কার্গো বিমান ক্রয় করা একান্তভাবে জরুরি বলে আমি মনে করি। যথাযথভাবে উদ্যোগ নিলে কার্গো বিমান ক্রয় করা সম্ভব।
তিনি বলেন, ঢাকা সিলেটের সাথে কার্গো পরিবহন শুরু হয়েছে, কিন্তু আমি চাই আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের বিমানের নিজস্ব কার্গো প্লেন থাকবে। যেটায় পণ্য পরিবহন করলে বিমানই লাভবান হবে।
হয়রানিমুক্ত যাত্রীসেবা নিশ্চিতের তাগিদ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, প্রবাসীরা দেশের জন্য কাজ করেন এবং প্রায় ১ কোটির কাছাকাছি লোক প্রবাসে আছেন, যারা ছুটির সময় দেশে আসেন। সেই কথাটা বিবেচনা করে তারা যেন কোনো রকম হয়রানির শিকার না হন, সেটার দিকে আমাদের আরও যত্নবান হতে হবে। যদিও এখন সেবাটা অনেক উন্নত হয়েছে, তারপরও আরও উন্নত হোক সেটা আমরা চাই।
কাস্টমস সিস্টেমকে সম্পূর্ণ ডিজিটাইজড করার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ যখন বিদেশ থেকে আসে হয়তো কিছু পণ্য ক্রয় করে নিয়ে আসতে চায়, তারা যেন কোনো হয়রানির মধ্যে না পড়ে। যদি পুরো ডিজিটাইজড হয়ে যায়, তাহলে খুব সহজে যাত্রীসেবা দেওয়া সম্ভব হবে। সেই বিষয়ে আরও সচেতন হতে হবে।
দক্ষিণ এশিয়ায় বিমানের রুট বাড়ানোর পরামর্শ
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বিমানটা আন্তর্জাতিক রুটের মধ্যে চলে। যে জন্য এই জায়গাটায় আমাদের অনেক সুযোগ রয়েছে, যাতে আন্তর্জাতিকভাবে যোগাযোগ রক্ষা করা। সেই সাথে আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলো অর্থাৎ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সাথে আমাদের যোগাযোগটা আরও বাড়ানো দরকার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মালদ্বীপে ইতোমধ্যে বেসরকারিখাত থেকে বিমান যাওয়া শুরু করেছে। কিন্তু আমাদের বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্স আমি মনে করি যে, আমাদের এই দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে... সব জায়গায় কিন্তু লাভ লোকসান খতিয়ে দেখার দরকার নেই। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করা।
নতুন কেনা উড়োজাহাজগুলো সুন্দরভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করার নির্দেশ দেন সরকারপ্রধান।
দেশের বিমানবন্দরগুলোর আধুনিকায়নে সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সৈয়দপুরের নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে, সিলেটের নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে, আমাদের চট্টগ্রামকেও উন্নত করতে হবে। বরিশাল এয়ারপোর্টটাও চালু করা হয়েছে। সেখানকার সেবাও উন্নত করতে হবে। এটা আমাদের দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সৈয়দপুর এয়ারপোর্ট আমরা আরও উন্নতমানের করে দিচ্ছি, যেন আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলো অর্থাৎ এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলো যেমন ভুটান, নেপাল বা ভারত তারাও যেন আমাদের সৈয়দপুর এয়াপোর্ট এবং সিলেট এয়ারপোর্ট, চট্টগ্রাম এয়ারপোর্ট তারা ব্যবহার করতে পারে। সেই সুযোগটা আমাদের সৃষ্টি করে দিতে হবে।
বলাকা ভবন প্রান্তে অন্যান্যের মধ্যে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সাজ্জাদুল হাসান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ মোস্তফা কামাল উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২২
এমইউএম/এমজেএফ