ঢাকা: কাতারের আন্তর্জাতিক কৃষি প্রদর্শনী কাতার ইন্টারন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড ইনভারঅনমেন্টাল এক্সিবিশনে-২০২২ অংশ নিয়েছে কৃষিখাতের প্রযুক্তিভিত্তিক সেবা প্রদানকারী বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিষ্ঠান ‘ডাক্তারচাষী’।
‘ডাক্তারচাষী’ হলো একটি ডিজিটাল ফার্মিং সফটওয়্যার যেখানে কৃষক এবং অন্যান্য কৃষিখাত সংশ্লিষ্টদের সঠিক চাষাবাদের ব্যবস্থা, উন্নত পরিবেশ নিশ্চিত করতে এবং স্বাস্থ্যের ঝুঁকি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, কৃষকদের পরিবেশ ও স্বাস্থ্য রক্ষা করতে বিশ্বব্যাপী কৃষকদের ডিজিটালভাবে ক্ষমতায়ন করার মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফসল উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনা চলমান করতে ডেটা-চালিত কৃষি নিশ্চিত করাই ডাক্তারচাষীর একমাত্র উদ্দেশ্য।
কৃষিখাতে প্রযুক্তি উদ্ভাবন, খাদ্য নিরাপত্তা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা তুলে ধরতে নবমবারের মতো এই আয়োজন করেছে দেশটি। দোহা এক্সিবিশন অ্যান্ড কনভেনশন সেন্টারে চলতি বছরের ১০ মার্চ শুরু হয়েছে চলবে ১৪ মার্চ পর্যন্ত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কৃষিখাতের প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তারা এই প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন। আর বাংলাদেশ থেকে অংশ নিয়েছে সফটওয়্যার কোম্পানি মদীনাটেকের ‘ডাক্তারচাষী’।
দেশের কৃষকরা মোবাইল ফোনে ‘ডাক্তারচাষী’ অ্যাপ ডাউনলোড করে সেবা ও পরামর্শ নিতে পারছেন। ডাক্তারচাষী অ্যাপের মাধ্যমে ছবি আপলোড করলে ফসলের রোগ চিহ্নিত হয়। কখন ফষল চাষ করতে হবে, কখন তুলতে হবে এসব কিছুর একটি পরিপূর্ণ সমাধান দিচ্ছে ডাক্তারচাষী। কৃষি প্রধান বাংলাদেশে ভালো ফসল পেতে পরামর্শ দেওয়ার এরকম ব্যবস্থা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এবিষয়ে ডাক্তারচাষী অ্যাপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মদিনাটেকের কর্ণধার ডাক্তার মদীনা আলী বলেন, চাষাবাদের ডিজিটাল সফটওয়্যার ডাক্তারচাষী অ্যাপের মাধ্যমে সময় এবং খরচ বাঁচিয়ে চাষাবাদের পথ দেখায়। এই সফটওয়্যার দিয়ে আমরা চাষীদের খুব দ্রুত তথ্য দিতে পারি। কিভাবে ফসলের রোগ চিহ্নিত করতে পারবেন কৃষক। কিভাবে বেশি ফসল উৎপাদন করতে পারবেন। ভালো ফসল উৎপাদনে সার, বীজ ও অন্যান্য উপকরণ আশেপাশে কোথায় পাওয়া যাবে এসব তথ্য দিচ্ছে ডাক্তারচাষী।
তিনি আরও বলেন, বড় বড় ব্যবসায়ীরা এই সফটওয়্যার নিয়ে প্রান্তিক পর্যায়ে চাষীদের দিতে পারবেন। ডাক্তারচাষী শুধু বাংলাদেশে নয়, সারাবিশ্বের কৃষকদের কৃষি উৎপাদনে পরামর্শ দিতে পারবে। তার জন্যই আমরা কাতার এগ্রিটেকে প্রদর্শন করেছি। একই সঙ্গে প্রদর্শনীর মাধ্যমে জানাতে এসেছি বাংলাদেশও কৃষিখাতে প্রযুক্তির ব্যবহার ও উদ্ভাবন নিয়ে কাজ করছে।
ডা. মদীনা আলী বলেন, কাতার এগ্রিটেকে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। অনেকেই কাতারে এবং অনেকেই বাংলাদেশে ফসল উৎপাদনে ডাক্তারচাষী অ্যাপ ব্যবহার করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। কাতারে যেভাবে চাষাবাদ হচ্ছে আমরা সেভাবে কাস্টমাইজ সেবা প্রদান করতে পারবো কিনা জানতে চেয়েছেন। আয়ারল্যান্ড, ফিনল্যান্ড ও ব্রিটেনের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেছে ডাক্তারচাষীর সঙ্গে কিভাবে কাজ করা যাবে।
কাতার কমিউনিটির অন্যতম বাঙালি নারী নেত্রী শামীমা নবী বলেন, বাংলাদেশি মেয়ে মদীনা আলী এমন একটি সফটওয়্যার তৈরি করে বিশ্বের কাছে তুলে ধরায় আমি গর্বিত। এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষ ফসল উৎপাদনে সেবা নিতে পারবে। কাতারে অনেক বাংলাদেশি কৃষিখাতে বিনিয়োগ করেছে। মান সম্পন্ন ফসল উৎপাদন ও রোগ নির্ণয়ে ডাক্তারচাষী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২২
এসই