ঢাকা, সোমবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ মে ২০২৪, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

কলাপাতা-ইলিশ থাকছে না এবার সাধুসঙ্গে

মো. জাহিদ হাসান জিহাদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০২২
কলাপাতা-ইলিশ থাকছে না এবার সাধুসঙ্গে

কুষ্টিয়া: কলাপাতায় ভাত, ইলিশ মাছ, ডাল, সবজি রান্না, পাতে দই। বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ্ তার জীবদ্দশায় অনুসারীদের নিয়ে সাধুসঙ্গ শেষ করতেন এসব খাবার খাওয়ার মাধ্যমে।

সেই রীতি অনুযায়ী কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় যুগ যুগ ধরে চলে আসা এসব খাবার দিতো লালন একাডেমি। এবার দোল পূর্ণিমার ছেঁউড়িয়ার লালনের আঁখড়াবাড়িতে চলছে লালন মেলা ও সাধু সঙ্গ। তবে এবার খাবার কলাপাতার পরিবর্তে দেওয়া হবে প্লাস্টিকের পাত্রে, আর ইলিশের পরিবর্তে দেওয়া হবে রুই মাছ- এমনটাই জানিয়েছেন আয়োজকরা।

সাধু সঙ্গ শুরু হবে বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) রাতে। লালন একাডেমির পক্ষ থেকে আঁখড়াবাড়ীতে অবস্থানরত বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা সাধুদের জন্য তিন বেলা খাবারের আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে অধিবাস হিসেবে খিচুড়ির সঙ্গে দেওয়া হবে সবজি।
শুক্রবার (১৮ মার্চ) সকালে মিস্টি পায়েশের সঙ্গে দেওয়া হবে মুড়ি ভাজা। এটা বাল্যসেবা হিসাবে গ্রহণ করেন সাধু-ভক্তরা।

তারপর গুরু শিষ্যদের ভাব আদান-প্রদান শেষে দুপুরে পুণ্যসেবা গ্রহণ করবেন সাধু-ভক্তরা। এতে ভাত, মাছ, ডাল ও দই থাকবে। প্রতিবারেরর ন্যায় এবারও তিনবেলা খাবারের আয়োজন করা হয়েছে। এ জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে আঁখাবাড়িতে রান্নার সরঞ্জাম এবং জিনিসপত্র। এবার প্রায় ১০ হাজার মানুষের খাবারের আয়োজন করা হচ্ছে।

খাবারের দায়িত্বে থাকা লালন মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য জাহিদ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ্ তার জীবদ্দশায় যেভাবে সাধুদের আপ্যায়ন করতেন, তারাও সেই নিয়মে সাধুদের আপ্যায়ন করান। সাধু সঙ্গ চলাকালীন সাধু-ভক্তদের খাবারের আয়োজন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, খাবারের জন্য ৩ হাজার কেজি চাউল, ৬শ কেজি রুই মাছ, ৩শ কেজি ডাল, ৪শ কেজি দই এবং ৫০ কেজি মুড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি জানান, এবারে পর্যাপ্ত কলা পাতা না পাওয়ায় বিকল্প হিসেবে প্লাস্টিকের ওয়ানটাইম প্লেট ব্যবহার করা হবে। আর ইলিশ মাছের সরবরাহ কম থাকায় বিকল্প হিসেবে থাকছে রুই মাছ।

বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদ কুষ্টিয়ার সহ-সভাপতি দেওয়ান মাসুদ রহমান স্বপন বাংলানিউজকে বলেন, আশা করি প্রতিবারের ন্যায় এবারো সাধু ভক্তরা সু-শৃঙ্খল ভাবে সেবা গ্রহণ করবেন। আর ভালো মানের খাবার দেওয়ার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে লালন একাডেমির পক্ষ থেকে।

এদিকে সাধুসঙ্গ শুরুর দুই দিন আগে আনুষ্ঠানিক ভাবে লালন মেলা শুরু হওয়ায় নিজেদের রান্না করে খেতে হচ্ছে আখড়ায় আসা সাধুদের। ছোট ছোট পাতিলে নিজেদের মতো রান্না করছেন তারা। আবার বাইরে থেকে খাবার কিনেও খেতে হচ্ছে তাদের।

লালন অনুসারী দাউদ আলী শাহ্ ফকির বাংলানিউজকে বলেন, খাবারের কষ্ট তো হচ্ছেই। সকালে খিচুড়ি দেয়নি। নিজেরা রান্না করে বা বাইরে থেকে খেতে হওয়ায় অনেকেই চলে গেছেন। আবার সাধুসঙ্গ শুরু হলে হয়তো তারা আসবেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৭ ঘণ্টা, ১৬ মার্চ, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।