ঢাকা, রবিবার, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ফরিদপুরে ২ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০০ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২২
ফরিদপুরে ২ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা

ফরিদপুরে ওসিসহ ২ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মারপিট, চাঁদাবাজি ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে।

রোববার ফরিদপুরের সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের ঠেনঠেনিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. মুরাদ মোল্লা (৪৬) জেলার ৬ নম্বর আমলি আদালতে মামলাটি করেন ।

তিনি মোল্লা গট্টি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য।

জানা যায়, সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশিকুজ্জামান ও উপপরিদর্শক (এসআই) মো. হান্নানের বিরুদ্ধের এই মামলা করা হয়েছে।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী ইব্রাহিম হোসেন জানান, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ফরিদপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন এবং বিভাগীয় তদন্তের জন্য ডিআইজি (ঢাকা রেঞ্জ) ও ফরিদপুরের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৮ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আদালত।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মুরাদ মোল্লা ৩ বারের নির্বাচিত ইউপি সদস্য। ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর ইউপি নির্বাচনের আগে সালথা থানার ওসি তার কাছ থেকে টাকা দাবি করেন। তার দাবিকৃত টাকা না দিলে নির্বাচন না দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে তিনি (মুরাদ) বাধ্য হয়ে ওসিকে ৭৫ হাজার টাকা দেন। এরপরও ওসি তার কাছে আরও ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। দাবিকৃত টাকা না দেওয়ায় মুরাদ দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পরেও তাকে ৩টি মিথ্যা মামলায় আসামি করা হয়।

এতে আরও বলা হয়েছে, গত ১৪ মার্চ রাত অনুমান ১টার দিকে কোনো মামলা বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই পূর্ব আক্রোশের জেরে মুরাদের ভাই জিহাদকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যান ওসি। মুরাদ পরদিন সকাল ৮টার দিকে সালথা থানায় গিয়ে থানার হাজতে মোট ৮ জনকে দেখতে পান। সকাল অনুমান ১০টার দিকে তিনি ওসির কাছে তার ভাইয়ের অপরাধ সম্পর্কে জানতে চান। ওসি কোনো অপরাধের কথা না বলে তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য মুরাদের কাছে ২৫ হাজার টাকা দাবি করেন। দাবিকৃত টাকা না দিলে জিহাদের নামেও ৩টি মামলা দিয়ে কোর্টে চালান করার হুমকি দেন।

মুরাদ চাঁদার টাকা না দেওয়ায় ওসির হুকুমে এসআই হান্নান জিহাদকে থানা হাজত খানা থেকে বের করে ভিন্ন কক্ষে নিয়ে কক্ষের জানালার সঙ্গে হাতে হ্যান্ডকাপ দিয়ে আটকে লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করেন। ওই দিন সন্ধ্যা অনুমান সাড়ে ৭টার দিকে জিহাদকে মিথ্যা মামলায় আসামি করে আদালতে প্রেরণ করা হয়। ওই মামলায় ২৩ মার্চ জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর শরীরের আঘাত দেখে এবং আঘাতের কারণে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে না পারায় জিহাদকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে জিহাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে অভিযোগে।

ওসি আশিকুজ্জামান দাবি করেন, 'মো. মুরাদ মোল্লা তার ভাইকে থানা হাজত থেকে তদবির করে ছাড়িয়ে নিতে না পেরে মারপিট, টাকা দাবিসহ বিভিন্ন মনগড়া, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচার করে। '

ফরিদপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, 'আদালতের নির্দেশ এখনও পাইনি। আদালতের নির্দেশ পেলে এ ব্যাপারে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া হবে। '

ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, 'এ ঘটনায় জেলা পুলিশ ইতোমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে। দোষ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরাধ করলে কাউকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। '

বাংলাদেশ সময়: ০১০০ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২২
এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।