ঢাকা: পবিত্র কুরআন সুন্নাহর আলোকে ওআইসি'র আন্তর্জাতিক ফিকহ একাডেমি কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক জ্যোতির্বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী অভিন্ন হিজরি তারিখ অনুসরণ করে অন্যান্য মুসলিম দেশের মতো বাংলাদেশেও তা বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়েছে।
সোমবার (২৮ মার্চ) সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহ বাংলাদেশের পক্ষে এই দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কুরআন এবং হাদিসের বিভিন্ন ব্যাখ্যা তুলে ধরে বক্তারা বলেন, ঈদ, কুরবানিসহ চাঁদের তারিখ নির্ভর সকল ইবাদত ও ইসলামী পর্বসমূহ পালনে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের দিন-তারিখের পার্থক্য চলে আসছে। ফলে চাঁদের তারিখ নির্ভর সকল ইবাদত ও ইসলামী পর্বগুলো বাংলাদেশে সব সময়ই পৃথিবীর অন্যান্য দেশের এক বা দুই দিন পরে পালিত হয়। কাজেই চাঁদের হিসাব যদি সঠিক পদ্ধতিতে নির্ধারণ করা না হয় তবে রমজানের সিয়ামসহ অন্যান্য ফরজ ইবাদত নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আসন্ন রমজানকে কেন্দ্র করে দেশ ও জাতিকে সে বিষয়ে সজাগ ও সচেতন করা এবং চাঁদের হিসাব প্রসঙ্গে ইসলামের সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরা প্রয়োজন।
তারা বলেন, সার্বিক পর্যালোচনায় কুরআন-সুন্নাহ, মাযহাবের ইমাম, বিশ্ব বিখ্যাত ফকিহ, মুফতিগনের সম্মিলিত রায় এবং ওআইসি'র সিদ্ধান্ত ও বাস্তবতার আলোকে আলাদা আলাদা দেশে দেশে রোজা রাখা বা ঈদ পালন করার কোনো সুযোগ বর্তমানে নেই। ওআইসি'র সদস্য দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জন্য উক্ত ফতোয়ার অনুসরণ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বর্তমানে সংবাদ পৌঁছানোর অসুবিধা না থাকায় কুরআন-সুন্নাহ'র নির্দেশ অনুযায়ী ইমামদের ফাতওয়া অনুসরণ করাই একজন মুসলিমের দায়িত্ব।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সরকারের কাছে দুটি দাবি তুলে ধরা হয়। এগুলো হলো ফরজ ইবাদত সঠিকভাবে পালনের জন্য ওআইসির সিদ্ধান্ত মোতাবেক আসন্ন রমজান মাস থেকেই চন্দ্র মাসের নির্দিষ্ট ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে আগামী ২ এপ্রিল শনিবার থেকে বাংলাদেশেও রমজান মাস শুরুর ঘোষণা দেওয়া। এবং একইভাবে ইসলামী অন্যান্য পর্বগুলো যেমন শবে কদর, দুই ঈদের রাত, দুই ঈদ, মুহাররম, তাকবিরে তাশরিক, আইয়্যামে বিযের নফল রোযা পালনের ক্ষেত্রেও ওয়াইসির দ্বিতীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক হিজরি ক্যালেন্ডার অনুসরণ করার ঘোষণা দেওয়া।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের অধ্যাপক এবং ওআইসি, ইফা তে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি অধ্যাপক সাইয়্যেদ আব্দুল্লাহ আল আল মা'রূফ, বিশিষ্ট বিজ্ঞানী, গবেষক ও ইসলামী চিন্তাবিদ কাজী মুহাম্মদ রেজাউর রহমান ও গাউছিয়া ইসলামী সিনিয়র মাদ্রাসার সহযোগী অধ্যাপক মুফতি মুহাম্মদ আখতার ফারুক।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২২
এইচএমএস/এসআইএস