সিলেট: সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় দুই চেয়ারম্যানের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে মাওলানা সালেহ আহমদ (৫০) নামে এক মাদরাসা শিক্ষক নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২০/২৫ জন আহত হয়েছেন।
সোমবার (৪ এপ্রিল) সকালে উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) বর্তমান চেয়ারম্যান রফিক আহমদের পক্ষে শ্যামপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান রশিদ আহমদের পক্ষের শ্যামপুর গ্রামের লোকজন সংঘর্ষে জড়ায়। সালেহ আহমদ উপজেলার হেমু গ্রামের বাসিন্দা। তিনি সিলেট নগরের মেজরটিলা তাহফিজুল কোরআন মাদরাসায় শিক্ষকতা করতেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, রোববার (৩ এপ্রিল) উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান হাদপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রফিক আহমদ একটি জমিতে মাটি ভরাট কাজ করাচ্ছিলেন। এতে শ্যামপুর গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রশিদ আহমদের লোকজন বাধা দেয়। এরই জের ধরে রাতে তারাবির নামাজের পর উত্তেজনা দেখা দেয়।
স্থানীয়রা জানায়, রোববার রাত ১২টার দিকে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুই গ্রামবাসী হরিপুর বাজারে সংঘর্ষের ডাক দেয়। সকাল পর্যন্ত সংঘর্ষে দফায় দফায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ চলে। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসেও সংঘর্ষ থামাতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। এ সময় আশপাশের গ্রামের মুরব্বিরা এসে সংঘর্ষ থামাতে চেষ্টা করেন। এরপর স্থানীয় মাদরসার একদল আলেম দুই পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতা করতে ঘটনাস্থলে যান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সংঘর্ষ থামাতে আলেমদের প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থলে যান। অন্যদিকে, পুলিশ সংঘর্ষ থামাতে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে সবাই দিকবিদিক ছুটতে থাকে। একপর্যায়ে সালেহ আহমদ মাটিতে পড়ে যান। তখন একটি পক্ষ সালেহ আহমদকে ধরে নিয়ে গিয়ে পিঠিয়ে হত্যা করে। পরে সালেহ আহমদের মরদেহ উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ২০/২৫ জন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
সিলেট জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. লুৎফর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সংঘর্ষে এক মাদরাসা শিক্ষক নিহত হয়েছেন। এছাড়া উভয় পক্ষে অন্তত ২০/২৫ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ সংঘর্ষস্থল থেকে বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে।
তিনি বলেন, দুই চেয়ারম্যানের মধ্যে জমিতে মাটি ভরাট নিয়ে আগে থেকে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এরই জেরে সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনা ঘটে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০২২
এনইউ/আরআইএস