ঢাকা: নিরাপদ কর্মক্ষেত্র নিশ্চিত ও শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণে জাতীয় মানদণ্ড তৈরির দাবি জানিয়েছে শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম।
একই সঙ্গে রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত বিচার ও হতাহতদের আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ ও আহতদের দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
রোববার (২৪ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে রানা প্লাজা দুর্ঘটনার নয় বছর স্মরণে আয়োজিত এক মানববন্ধনে সংগঠনটি এসব দাবি জানায়।
শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরামের আহ্বায়ক ড. হামিদা হোসেন বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক নির্বিশেষে সব শ্রমিককে শ্রম আইনের আওতায় আনতে হবে, পেশাগত রোগে আক্রান্ত ও দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকের চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা এবং হাসপাতালগুলোতে বিশেষ ইউনিট স্থাপন করতে হবে।
নির্মাণ, রাসায়নিক ইঞ্জিনিয়ারিংসহ ঝুঁকিপূর্ণ কর্মক্ষেত্র পরিদর্শনে দেশব্যাপী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা বা ঝাটিকা পরিদর্শন ব্যবস্থা চালু করার দাবিও জানান তিনি।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রমজীবী মানুষের জীবন ও কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা বিষয়ে কারখানা মালিক ও শ্রমিক নিয়োগকারীদের অবজ্ঞা-অবহেলা-উদাসীনতা ও আইন অমান্য করার প্রবণতা, সরকারের নিয়মিত পরিদর্শন ও আইন বাস্তবায়নে দৃঢ়তার অভাব ও শ্রম আইনে অপর্যাপ্ত নামমাত্র ক্ষতিপূরণের বিধান নিরাপদ কর্মক্ষেত্র নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া অস্বাস্থ্যকর কর্মস্থল, বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য, ধুলাবালি, অত্যাধিক শব্দ-তাপে কাজ, কোন সুরক্ষা ছাড়াই উচ্চতায়, মাটির গভীরে কাজ করা প্রভৃতি কারণে শ্রমিকরা জটিল ও দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে।
বক্তারা রানা প্লাজা ভবন ধসের নয় বছর পার হলেও এ ঘটনায় দায়েরকৃত হত্যা মামলা ও বিল্ডিং কোড সংক্রান্ত আইন ভঙ্গের মামলার আজও নিষ্পত্তি না হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেন।
তারা বলেন, রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির পর হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত কমিটি ক্ষতিপূরণের পরিমাণ প্রায় ১৫ লাখ টাকা করার সুপারিশ করেছিলেন। কিন্তু সেব সুপারিশ আজও বাস্তবায়ন হয়নি। ২০০৬ সালে শ্রম আইনে নিহত শ্রমিকের ক্ষতিপূরণ ১ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এর ১৩ বছর পর ২০১৮ সালের শ্রম আইন সংশোধনীতে নিহত শ্রমিকের ক্ষতিপূরণ ২ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২২
পিএম/এমএমজেড