ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ মে ২০২৪, ০১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

মাছ চুরির অভিযোগে প্রতিবন্ধী যুবককে গাছে বেঁধে নির্যাতন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২২
মাছ চুরির অভিযোগে প্রতিবন্ধী যুবককে গাছে বেঁধে নির্যাতন

দিনাজপুর: দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে ধানের জমিতে থাকা খোলসানী (বাঁশ দিয়ে তৈরি মাছ ধরার বিশেষ ফাঁদ) থেকে মাছ চুরির অভিযোগ এনে সুমন মিয়া (২৫) নামে এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী যুবককে গাছে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতি সেই নির্যাতনের কয়েকটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে বিষয়টি সবার নজরে আসে।

এর আগে, শুক্রবার (২২ এপ্রিল) ভোরে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ভাতছালা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে পরিবারের লোকজন।  

নির্যাতনের শিকার সুমন মিয়া উপজেলার ২ নম্বর পালশা ইউনিয়নের ছয়ঘট্টি-বেলওয়া গ্রামের লতিফ মিয়ার ছেলে। ঘটনার পরপরেই তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে পরিবারের লোকজন।

শনিবার (২৩ এপ্রিল) রাতে এ ঘটনায় জড়িতদের নাম উল্লেখ করে ঘোড়াঘাট থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছে সুমনের বড় ভাই সাইফুল ইসলাম।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, গাছে রশি দিয়ে দুই হাত বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করেছেন কয়েকজন ব্যক্তি। তারা হলেন, উপজেলার ভাতছালা গ্রামের হামিদ মিয়ার ছেলে শাহারুল ইসলাম (৪৫) ও একই গ্রামের ইজ্জত আলীর ছেলে মোস্তাফিজুর (৩২) এবং তাঁতিপাড়া-বেলওয়া গ্রামের মৃত নুরু মিয়ার ছেলে ফারাজ আলী (৫৫) বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী সুমনকে একটি গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে দুই হাত বেঁধে লাঠি ও হাত দিয়ে পর্যায়ক্রমে নির্যাতন করছে।

নির্যাতনের স্বীকার সুমনের বড় ভাই সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ছোট মাছ ধরার জাল নিয়ে জমিতে টাঙ্গিয়ে দিয়ে আসে আমার ছোট ভাই সুমন। শুক্রবার ভোরে আমার মোবাইলের আলো জালিয়ে সে জমিতে যায় জাল থেকে মাছ নিয়ে আসতে। তখন অভিযুক্ত ব্যক্তিরা জমি থেকে তাদের মাছ ধরার খোলসানী (বাঁশ দিয়ে তৈরি মাছ ধরার বিশেষ ফাঁদ) থেকে মাছ চুরি করার মিথ্যা অভিযোগ এনে আমার ভাইকে গাছের সঙ্গে বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন করে।

তিনি আরো বলেন, আমরা খুবই গরিব। দিন এনে দিন খাই। আমার ছোট ভাই বুদ্ধি প্রতিবন্ধী এবং ছোট বেলায় প্যারালাইসিস হওয়ায় বর্তমানে সে বাম পায়ে শক্তি পায় না। পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে মেরে ফেলার উদ্দেশে নির্যাতন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, সুমনের পুরো শরীরে লাঠি দিয়ে মারধরের অনেকগুলো ক্ষতদাগ রয়েছে। এছাড়াও বাম চোখের নিচে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন থাকলেও বর্তমানে তিনি আশঙ্কামুক্ত রয়েছেন।

ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু হাসান কবির জানান, শনিবার (২৩ এপ্রিল) রাতে স্থানীয় ইউপি মেম্বারসহ সুমনের পরিবারের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। পালশা ইউনিয়ন বিটের বিট কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) দুলু মিয়াকে অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।