ফরিদপুর: বৈশাখের প্রথম থেকেই ফরিদপুরে তীব্র তাপদাহ চলছে। এতে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে জনজীবন।
স্থানীয়রা বলেন, তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় প্রচণ্ড অস্বস্তি হচ্ছে। এদিকে, তীব্র গরমের হাত থেকে রেহাই পেতে অনেকে গাছ তলার ছায়ায় বিশ্রাম নিচ্ছেন কেউবা পুকুর বা নদীতে নেমে পড়ছেন। একপশলা বৃষ্টির অপেক্ষায় ফরিদপুরবাসী। তারা বলেন, এত গরম যে, কোনো জায়গায় থাকা যাচ্ছে না।
সূর্যের প্রখর তাপে সাধারণ মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত। কয়েকদিন বৃষ্টি না হওয়া আর প্রচণ্ড রোদে ঘর থেকে বের হতে পারছে না শ্রমিক, দিন মজুরসহ খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষগুলো। সামান্য স্বস্তির ও একটু শীতল পরিবেশের জন্য ছুটছে গাছের ছায়াতলে। আর অতিরিক্ত গরমে একটু শীতল পরিবেশ ও স্বস্তির জন্য বিভিন্ন শরবত ও পানীয়র দোকানে ভিড় করছেন তারা।
মফিজ মোল্যা নামে এক রিকশাচালক বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রচণ্ড গরম আর রোদের কারণে রিকশা চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। সেই সঙ্গে তেমন যাত্রীও মিলছে না। তারপরও পেটের দায়ে রিকশা চালাচ্ছি।
দাউদ মাতুব্বর নামে এক শ্রমিক বাংলানিউজকে বলেন, গরমে কাজ করতে পারছি না। তাই ছায়ায় বসে আছি। শরীর কিছুটা অসুস্থ থাকার কারণে রোজা নেই তাই মাঝে মধ্যে দু’এক গ্লাস শরবত পান করছি। কিছু তো করার নেই।
ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. গণেশ কুমার আগরওয়ালা বাংলানিউজকে বলেন, প্রচণ্ড তাপদাহ আর লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে ফরিদপুরের জনজীবন। তাই তো ডায়রিয়ার প্রকোপও বেড়েছে। ফরিদপুরের একমাত্র ডায়েরিয়ার চিকিৎসা দেওয়া জেনারেল হাসপাতালটিতে ধারণক্ষমতার কয়েকগুণ বেশি রোগী ভর্তি হয়েছেন।
এই চিকিৎসক স্যালাইনের সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে পরিষ্কার খাবার পানি আর ঠাণ্ডা স্থানে থাকার পরামর্শ দেন।
এ ব্যাপারে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. খবিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বেলা ১১টা থেকে ৪টা পর্যন্ত সময় যখন তাপমাত্রা সবচেয়ে বেশি থাকে সেই সময়টাতে বাইরের কাজ কমিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে। ঘরের ভেতরে বা ছায়া আছে এমন জায়গায় থাকার চেষ্টা করতে হবে। প্রচুর পানি এবং তরল পানীয়, যেমন শরবত, ডাব, ফলের রস পান করতে হবে। যতবার সম্ভব গোসল করতে হবে। বারবার মুখ ও শরীরে পানির ঝাপটা দিতে হবে। যথেষ্ট বিশ্রাম নিতে হবে। ঢিলেঢালা এবং বাতাস পরিবহনকারী পোশাক পরতে হবে।
ফরিদপুর আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ এস এম সুরুজুল আমিন বাংলানিউজকে বলেন, সপ্তাহজুড়ে তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি থেকে ৪০ ডিগ্রির মধ্যে বিরাজ করছে। তবে আগামী শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) থেকে তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২২
এসআরএস