ঢাকা, শনিবার, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ জুন ২০২৪, ২১ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

সাতক্ষীরায় গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০২২
সাতক্ষীরায় গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ

সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরায় পারিবারিক কলহের জেরে সুমি খাতুন (২৩) নামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) সকালে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কাথন্ডায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত সুমি খাতুন সদর উপজেলার কাথন্ডা গ্রামের সাদ্দাম হোসেনের স্ত্রী ও তেঁতুলতলা গ্রামের শফিকুল ইসলামের মেয়ে।

সুমি খাতুনের বাবা শফিকুল ইসলাম বলেন, বছর ছয়েক আগে আমার একমাত্র মেয়ে সুমির সঙ্গে কাথন্ডা গ্রামের মৃত আবু বকর সরদারের ছেলে সাদ্দাম হোসেনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিসহ বিভিন্ন তুচ্ছ ঘটনায় সুমির ওপর ব্যাপক নির্যাতন চালাতো সাদ্দাম হোসেন, ভাসুর শাহিন আলম, জা সিনথিয়া খাতুন ও ননদ মিনা খাতুন।  

সুমি শ্বশুরবাড়িতে টিকতে না পেরে মেয়েকে নিয়ে আমার বাড়িতে চলে আসে। পহেলা রমজানে জামাই সাদ্দাম এসে সুমিকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। শুক্রবার সকালে ওর ভাসুর শাহীন আলম খবর দেয় সুমি আত্মহত্যা করেছে।

সুমির খালু সদর উপজেলার পায়রাডাঙ্গা গ্রামের রবিউল ইসলাম বলেন, আমরা সাদ্দামদের বাড়িতে যেয়ে সুমিকে মৃত অবস্থায় দেখতে পাই। ঘরের মধ্যে কোনো চেয়ার, টুল বা এই রকম কিছু পাইনি। আত্মহত্যা করতে গেলে তো উঁচু কিছুতে উঠে গলায় দড়ি দিতে হয়। এছাড়া গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার প্রাথমিক লক্ষণগুলো তার শরীরে দেখা যায়নি। তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মরদেহ ঝুলিয়ে দিয়ে আত্মহত্যা বলে প্রচার করা হয়েছে।

রবিউল ইসলাম আরও বলেন, পুলিশ ও আমাদের সামনেই সুমির ননদ মিনা খাতুন আস্ফালন করতে থাকেন। তিনি থানা বা আদালতের বারান্দায় না উঠতে প্রয়োজনে ৫ লাখ টাকা খরচ করবেন বলেও চিৎকার করতে থাকেন।

এদিকে, আত্মহত্যায় প্ররোচণার অভিযোগে সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা দিতে গেলে পুলিশ মামলা নিতে গড়িমসি করে বলে অভিযোগ করেছেন সুমির বাবা শফিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, আমরা এজাহার দিতে থানায় গেলে ওসি সাহেব বলেন, মেয়ে তো আত্মহত্যা করেছে। মামলা-টামলা দিয়ে কি হবে?

এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কবির বলেন, আমি নিশ্চিত এটা আত্মহত্যা। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার আগে সুরতহাল রিপোর্ট দেখে আত্মহত্যা বলা যায় কিনা এমন প্রশ্নের জবাব তিনি এড়িয়ে যান। মামলা গ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, আচ্ছা, উনারা আত্মহত্যার প্ররোচণার অভিযোগে মামলা দিক, দেখি কি করা যায়।

সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুতকারী সাতক্ষীরা সদর থানার এসআই ইসমাইল হোসেন বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

শ্বাসরোধ করে হত্যার এতগুলো উপাদান থাকার পরও কেন সন্দেহভাজনদের আটক করা হয়নি, এমন প্রশ্নের জবাবে এসআই ইসমাইল বলেন, জিহবা, হাত ও ঠোঁট ছাড়াও আত্মহত্যার অন্য লক্ষণ রয়েছে। তার সঙ্গে এটি মিলেছে বলে পুলিশ এটাকে আত্মহত্যা বলে সন্দেহ করছে।

মৃত সুমির ননদের দেখানো টাকার গরমের প্রভাব মামলায় পড়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিষয়টি সঠিক নয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।