ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিয়ে না করলে সেই তরুণীর আত্মহত্যার হুমকি

জাহিদুল ইসলাম মেহেদী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৪ ঘণ্টা, মে ১, ২০২২
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিয়ে না করলে সেই তরুণীর আত্মহত্যার হুমকি

বরগুনা: বিয়ের দাবিতে অনশন করা সেই তরুণীর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন।

রোববার (১ মে) দুপুরে প্রেমিক মাহমুদুল হাসানের মামা আবদুস সোবাহান গাজী ওই বাসায় গেলে একথা বলেন ওই তরুণী।

পরে স্থানীয়রা সোবাহান গাজীকে অবরুদ্ধ করে রাখেন এবং প্রেমিককে হাজির করতে হলেন।

গত বৃহস্পতিবার সকালে জামালপুরে ওই তরুণি ঢাকার উত্তরা থেকে বরগুনায় এসে বেতাগী উপজেলার চান্দখালী বাজার সংলগ্ন ঢাকার একটি বেসরকারি ভার্সিটি পড়ুয়া ছাত্রের বাসার সামনে অবস্থান নিয়েছেন।

তরুণী জানান, জামালপুরের সরিষাবাড়িতে তার গ্রামের বাড়ি। ঢাকার উত্তরায় থাকেন এবং সেখানের একটি ইউনিভার্সিটিতে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেন।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ সোনা মোল্লা বাংলানিউজকে জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে তরুণী আসার বাসা ছেড়ে পরিবারসহ আত্মগোপনে আছেন তার প্রেমিক মাহমুদুল হাসান।

ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজিতে (আইইউবিটি) সিভিল প্রকৌশল বিভাগে অধ্যায়ন করা প্রেমিক মাহমুদুল হাসানও উত্তরায় থেকে পড়াশোনা করতেন। সেখানেই দুজনের পরিচয় থেকে প্রেম।  

প্রেমিকার অভিযোগ, তিন বছর প্রেমের পর সম্প্রতি বিয়ের কথা বললে নানা অযুহাতে তাকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন মাহমুদুল। রোজার শুরুতে মাহমুদুল গ্রামের বাড়ি বরগুনায় চলে আসেন।

বাড়িতে এসে প্রেমিক মাহমুদুল যোগাযোগ কমিয়ে দিয়ে তরুণিকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন। এরপরই ওই তরুণী বৃহস্পতিবার সকালে বরগুনায় গিয়ে হাজির হন এবং চান্দখালি বাজার সংলগ্ন মাহমুদুলের বাসার সামনে অবস্থান নেন। কিন্ত তিনি আসার পরপরই মাহমুদুল ও তার পরিবার বাসা তালা দিয়ে গা ঢাকা দেয়।  

রোববার দুপুরে ওই তরুণিকে জানান, প্রেমিক মাহমুদুলের বাসা তালাবদ্ধ থাকায় তিনি বাসার সামনে বসে দিন-রাত পাড় করছেন। কিন্ত গত তিনদিনেও মাহমুদুল বা তার পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাননি। ফলে বাধ্য হয়ে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন এবং নির্ধারিত সময়ে তার দাবি মেনে না নেয়া হলে বাসার সামনে আত্মহত্যা করবেন। ওই তরুণী বলেন, আমি এখানে মানবেতর দিনযাপন করছি এবং মাহমুদুলের ফিরে আসার অপেক্ষায় আছি। ওর ফ্যামিলি যদি সাড়া না দেয় তবে আমি এখানেই আত্মহত্যা করব। কারণ, আমার ফেরার কোনো পথ খোলা নেই।  

তিনি আরো বলেন, আমি স্থানীয় প্রশাসন ও নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর কাছে হেল্প চাই।  

ওই তরুণীর নিরাপত্তা দিয়ে দেখভাল করছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হারুণ অর রশিদ সোনা মোল্লা। তিনি বলেন, আমরা তিনদিন ধরে মাহমুদুলের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। মেয়েটিকে মানবিক সহায়তা দিচ্ছি। আসলে এর সমাধান দরকার এবং আমরা সেই চেষ্টা করছি।  

রোববার দুপুরে মাহমুদুল হাসানের চান্দখালী বাজার সংলগ্ন ভাড়া বাসা গিয়ে তালাবদ্ধ দেখা যায়। সেখানে মাহমুদুল হাসানের মামা আবদুস সোবাহান গাজিকে অবরুদ্ধ রেখেছেন স্থানীয়রা। সোবাহান গাজী বলেন, আমি মানবিক কারণে মেয়েটির খোঁজ নিতে এসেছিলাম। আমার ভাগনে বা বোন ভগ্নিপতির সঙ্গে আমিও যোগাযোগ করতে পারছিনা। আমি চাই এটার সমাধান হোক।  

এ বিষয়ে মাহমুদুল হাসানের পরিবারের কারো সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।  

বেতাগী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম হাওলাদার বাংলানিউজকে বলেন, মেয়েটি যদি লিখিত অভিযোগ করে তবে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৯ ঘণ্টা, মে ০১, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।