বরিশাল: বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের টয়লেটের পাইপ কেটে নবজাতককে উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার (৭ মে) হাসপাতলের তৃতীয় তলায় প্রসূতি ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।
নবজাতকটি পিরোজপুর জেলার স্বরুপকাঠী উপজেলার গণমান শেখপাড়া বাজার সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা নেয়ামত উল্লাহ ও শিল্পী বেগম দম্পতির সন্তান।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম জানান,উদ্ধার করা শিশুটিকে নবজাতক শিশুর বিশেষ সেবা ইউনিটে (স্ক্যানু) ও তার মা প্রসূতি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। এদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শিশুটির পিতা নেয়ামত উল্লাহ জানান, তার স্ত্রী গুরুত্বর অসুস্থ হলে প্রথমে তাকে স্বরূপকাঠি হাসপাতালে এবং পরবর্তীতে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তির পর চিকিৎসায় স্ত্রী শিল্পী বেগমের অবস্থার উন্নতি হলে চিকিৎসক সিজার করার সিদ্ধান্ত নেয়।
তিনি বলেন, শনিবার দুপুরের দিকে সিজার করানোর জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনতে হাসপাতালের সামনে দোকানে যান। সেখান থেকে ওষুধ নিয়ে ওয়ার্ডে ফিরে এসে দেখি টয়লেটের সামনে লোকজনের ভিড় এবং আমার স্বজনরা কান্নাকাটি করছেন।
সেখানে থাকা লোকজন জানায় আমার স্ত্রী টয়লেটেই সন্তান প্রসব করে দিয়েছেন। নেয়ামত উল্লাহ বলেন, এরইমধ্যে হাসপাতালের একজন আমাকে টয়লেটের মধ্যে হাত দিতে বলেন। আমি পুরো হাত ঢুকিয়ে দিয়েও কিছু পাইনি। কান দিয়ে শুনি টয়লেটের পাইপের মধ্য থেকে কান্নার আওয়াজ আসছে। পরে হাসপাতালের লোকজনই জানান, যে তারা ফায়ার সার্ভিসে খবর দিয়েছেন। কিন্তু তাদের অপেক্ষা না করে দ্রুত টয়লেটের পাইপ ভেঙ্গে আমার সন্তানকে উদ্ধার করি।
তিনি বলেন, আমি যদি অপেক্ষা করতাম হয়তো আমার সন্তানকে বাঁচাতে পারতাম না কিন্তু বাঁচানোর তাগিদ থেকেই দ্রুত দোতলায় গিয়ে টয়লেটের পাইপ ভেঙে ফেলি এবং সন্তানকে তার মধ্য থেকে বের করি। আমার স্ত্রী আমাকে জানিয়েছেন, প্রসব বেদনায় সে টেরই পায়নি কখন টয়লেটের কমোডে সন্তান প্রসব হয়ে গেছে। আর তার সঙ্গে থাকা আমার আত্মীয় বিষয়টি না দেখলে হয়তো মেয়েকে পেতামই না।
নেয়ামত উল্লাহ ও শিল্পী বেগম দম্পতির চার বছর বয়সী আরও একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। নেয়ামত উল্লাহ পেশায় একজন জেলে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩২ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০২২
এমএস/এনএইচআর