ঢাকা, রবিবার, ১৭ ভাদ্র ১৪৩১, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৬ সফর ১৪৪৬

জাতীয়

পুলিশের ওপর হামলায় ‘স্বার্থান্বেষী মহলের ইন্ধন’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০২ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০২২
পুলিশের ওপর হামলায় ‘স্বার্থান্বেষী মহলের ইন্ধন’ প্রতীকী ছবি।

ঢাকা: মাত্র চারদিনের ব্যবধানে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঢাকার দুটি স্থানে পর পর পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ‘স্বার্থান্বেষী মহলের ইন্ধন‘ রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, মোটরসাইকেলের কাগজ দেখতে চাওয়া কিংবা দ্রুত সময়ে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষ করতে অনুরোধ করা খুবই স্বাভাবিক বিষয়।

এ অবস্থায় ইন্ধনদাতাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার কথা জানিয়েছেন তারা।

গত মঙ্গলবার (০৭ জুন) সকালে জুরাইন রেলগেইট এলাকায় উল্টোপথে আসা এক মোটরসাইকেল আটকে কাগজপত্র দেখতে চাইলে পুলিশের তিন সদস্যকে মারধর ও ট্রাফিক বক্স ভাঙচুর করা হয়। এর রেশ না কাটতেই শুক্রবার (১০ জুন) দুপুরে মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকায় মুসল্লিদের বিক্ষোভ মিছিল থেকে মারধর করা হয় মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও একজন সহকারী উপ-পরিদর্শককে (এএসআই)।

পৃথক হামলার ঘটনায় আহত হয়েছেন ওসিসহ পুলিশের অন্তত পাঁচ সদস্য। এর মধ্যে মোহাম্মদপুর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ মাথায় আঘাত পেয়ে রাজধানীর আগারগাঁও নিওরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আর জুরাইনের ঘটনায় আহত ট্রাফিক সার্জেন্ট আলী হোসেনের হাতে ২১টি সেলাই দিতে হয়েছে।

জুরাইনে হামলার ঘটনায় ৪৫০ জনকে আসামি করে শ্যামপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ মামলায় শুক্রবার (১০ জুন) পর্যন্ত ২৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ডিবি ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, জুরাইন রেলগেট এলাকায় উল্টোপথে আসা মোটরসাইকেল আটকে কাগজপত্র দেখতে চাওয়াকে কেন্দ্র করে ট্রাফিক সার্জেন্টসহ তিন পুলিশ সদস্যকে মারধরের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এদিকে শুক্রবার (১০ জুন) মোহাম্মদপুর থানার ওসির ওপর হামলার প্রসঙ্গে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মোহাম্মদপুর জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মৃত্যুঞ্জয় দে সজল বলেন, মহানবীকে (সা.) কটূক্তির প্রতিবাদে ঢাকা উদ্যানে স্থানীয়দের একটি সংগঠন বিক্ষোভ করার প্রস্তুতি নেয়। তখন ওসি সাহেব তাদের দ্রুত সময়ে কর্মসূচি শেষ করার কথা বলেন। এরপর চলে আসার সময় কয়েকজন যুবক পেছন থেকে তার ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীদের চিহ্নিত করতে আমরা কাজ করছি।

পুলিশের ওপর হামলার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মনে করছেন, যেকোনো বাহিনীর তুলনায় পুলিশ জনগণের কাছাকাছি থাকে। যে কারণে জঙ্গি থেকে শুরু করে স্বার্থানেষী মহল সহজেই পুলিশকে টার্গেট করে। তারা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে পরিস্থিতি অস্বাভাবিক করে ফায়দা লুটতে চায়। এই ধরনের হামলা ঠেকাতে আরও সতর্ক থাকা এবং দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, জুরাইনে একজন উল্টোপথে গাড়ি নিয়ে আসলো। আর তার কাছে কাগজ দেখতে চাওয়াকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তোলা হলো। মুহূর্তে শতশত লোক জড়ো করে পুলিশ সদস্যদের মারধর ও ট্রাফিক বক্স ভাঙচুর 
করা হয়েছে। এটা স্পষ্ট স্বার্থান্বেষী মহলের ইন্ধনে এই হামলা হয়েছে। আমরা এই ইন্ধনদাতাদের বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো। ইতোমধ্যে তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

ইন্ধনদাতাদের খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, এই হামলাগুলোর পেছনে ইন্ধনদাতা আছে। ইন্ধন ছাড়া তো পুলিশের গায়ে সাধারণ মানুষ হাত দেবে না। যারা ইন্ধন দিচ্ছে তাদের খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে, সম্প্রতি মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে ডিএমপি কমিশনার বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক কর্মসূচি বেড়েছে। ঢাকা মহানগর এলাকায় রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে যেন কেউ কোনো আগুন-সন্ত্রাস বা নাশকতা করতে না পারে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১০১ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০২২
পিএম/এনএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।