ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে আইনে পরিবর্তন আনার সুপারিশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৭ ঘণ্টা, জুলাই ৩, ২০২২
কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে আইনে পরিবর্তন আনার সুপারিশ

ঢাকা: কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটের আইনে কিছু পরিবর্তন আনার সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

তিনি বলেন, গুরুতর অপরাধ করলে যাতে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া যায়, এ জন্য শিশু আইনে শিশুদের বয়স ১৮ বছর থেকে কমানোর সুপারিশ করা হয়েছে।

রোববার (০৩ জুলাই) বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক জাতীয় কমিটির সভা শেষে তিনি এ কথা বলেন।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর সভাপতিত্বে সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রী, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী, শ্রমপ্রতিমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন।  

 মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, আইনে আগে ১৪ বছর পর্যন্ত শিশু হিসেবে ধরা হতো। কিন্তু বর্তমানে আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সমন্বয় করে এটা ১৮ বছর করা হয়েছে। এখানে বাংলাদেশের বাস্তবতার নিরিখে পরিবর্তন আনা দরকার। এই বয়সটা ১৮ বছরের নিচে আনার প্রয়োজন বলে সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে আমার মতে এটা আগের মতো ১৪ বছর করা যায়। কারণ সম্প্রতি ১৪ বছরের একজন ছাত্র শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা করেছে। ওই ছাত্র শিশু হওয়ায় তাকে আইনের আওতায় আনা সমস্যা হচ্ছে। এজন্য আইন মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে দেশের প্রেক্ষাপটে ও আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন দেশের আইনে কি আছে সেসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আইনের পরিবর্তন আনতে কাজ করবে।  

তিনি বলেন, কিশোর গ্যাং বর্তমানে আমরা লক্ষ্য করছি। এ জন্য আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে আমরা মনে করি আইনের কিছু সংশোধন হওয়া উচিত। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ১৮ বছর পর্যন্ত শিশু। আইনে আছে শিশুদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপট, ইন্টারন্যাশনাল প্রেক্ষাপটের সঙ্গে মিলে না। গত কয়েকদিনে আপনারা লক্ষ্য করেছেন, ১৪ বছরের দশম শ্রেণির ছাত্র শিক্ষককে মেরে ফেলেছে। এখন তার বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাওয়া যাচ্ছে না। কারণ আন্তর্জাতিক আইনে, বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় আইনে সে শিশু। শিশুর বিরুদ্ধে তো অ্যাকশন হয় না।
'সে কারণে বাস্তবতার নিরিখে আমরা মনে করছি আইনের পরিবর্তন হওয়া দরকার। সে আলোকে আমাদের বিজ্ঞ আইনমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি এবং ওনার মাধ্যমে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি'।

মোজাম্মেল হক বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু যে আইন করেছিলেন, তখন শিশু আইন ছিল ১৪ বছর। এখন আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে ১৮ বছর করা হয়েছে। সে বিষয় বিবেচনা করে নতুন আইন কীভাবে তৈরি করা যায়, আইনমন্ত্রীর কাছে আমরা সেই পরামর্শ কামনা করেছি।

মন্ত্রী বলেন, কিশোর গ্যাং এখন যে হারে বিস্তৃতি লাভ করছে এবং একই সঙ্গে মাদকদ্রব্য। ইদানিং তরুণরা বেশি মাদকসেবী বলে আমাদের কাছে রিপোর্ট রয়েছে। বয়স্করা তুলনামূলক কম। রাইজিং বয়স, কিছু কিছু ক্ষেত্রে মেয়েরাও আজকাল... অবশ্য সংখ্যায় খুব কম তারা মাদকাসক্ত হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বয়সের কারণে আইন প্রয়োগ শিথিল হয়ে যায়। এ কারণে এ সব মাদকদ্রব্য... কীভাবে আইন তৈরি করা যায়, কীভাবে সময় উপযোগী করা যায় সেগুলো বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, বৈঠকে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি শিশু আইন সংশোধন করার। আমার ব্যক্তিগত অভিমত শিশুদের বয়স ১৪ বছর পর্যন্ত করা। তবে সভায় এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সিদ্ধান্ত হয়েছে ১৮ বছর থেকে কমানোর।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৭ ঘণ্টা, জুলাই ০৩, ২০২২
জিসিজি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।