ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘ভাল হয় কিছু না খেয়ে থাকতে পারলে’

মাছুম কামাল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০২২
‘ভাল হয় কিছু না খেয়ে থাকতে পারলে’

ঢাকা: জ্বালানি তেলের পর এবার বেড়েছে সয়াবিন তেলের দামও। বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৭ টাকা বাড়িয়ে ১৯২ টাকা করা হয়েছে।

এছাড়া প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ধরা হয়েছে ১৭৫ টাকা। আর ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৯৪৫ টাকা। ১ লিটার খোলা পাম তেলের দাম ধরা হয়েছে ১৪৫ টাকা।

বিক্রেতারা বলছেন, এতে বাজারে তেমন প্রভাব পড়বে না। অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, বিজ্ঞপ্তির আগেই দাম বাড়িয়েছেন বিক্রেতারা।  

মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) নিকেতন বাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দাম বাড়ানোর পর বোতলজাত সয়াবিন তেল নির্ধারিত দামে মিললেও অনিয়ম হচ্ছে খোলা ও পামওয়েলের ক্ষেত্রে। পুরনো স্টকের তেলও নতুন দামে বিক্রি করছেন দোকানিরা।

নিকেতন বাজার এলাকার মায়ের দোয়া ভ্যারাইটিজ স্টোরের সত্ত্বাধিকারী রাইসুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বাজার পরিস্থিতি আমরা বুঝি না। এগুলো আমাদের দখলে নেই। আমরা বেশি দামে কিনেছি তাই বেশি দামে বিক্রি করছি।

তবে কেনা দামের মেমো দেখতে চাইলে তিনি অপারগতা জানান এবং আগের দামেই তেল বিক্রি করবেন বলে আশ্বস্ত করেন।

একই চিত্র দেখা গেছে বাজারের অন্যান্য খুচরা মুদি দোকানগুলোতেও। সেখানে খোলা সয়াবিন তেল ১৭৫ টাকায় বিক্রির কথা থাকলেও মূল্য তালিকা না টানিয়ে সোমবার থেকেই ১৮৫ টাকা লিটার বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।

একই বাজারের রত্না স্টোরের সত্ত্বাধিকারী সাইফুল ইসলাম বলেন, আজ থেকেই তো তেলের দাম বেড়েছে। আমাদের কিছু করার নেই। তবে আমরা আগের দামে কেনা তেল নতুন দামে বিক্রি করছি না।

বাজারে মুদি পণ্য কিনতে আসা রণজিৎ সরকার বাংলানিউজকে বলেন, আমি পরশু দিন খোলা তেল ১৭৫ টাকা করেই নিয়েছি। আজকে এসে দেখি ১৮৫ টাকা করে বিক্রি করছে। সবচেয়ে ভাল হয়, কিছু না খেয়ে থাকতে পারলে। তাহলে আর দাম নিয়ে টেনশন থাকে না।

বাজার থেকে তেল কিনে ফিরছিলেন রিয়াজুল ইসলাম। তিনি বেসরকারি চাকরিজীবী। জানতে চাইলে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, তেলের নতুন দাম সম্পর্কে আমার জানা ছিল না। এই মাত্র শুনলাম। আমরা তো তাহলে আগের থেকেই বাড়তি দামে তেল কিনছি। দোকানিরা যে যেভাবে পারছে বিক্রি করছে। আমাদের তো খেতে হবেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, আমাদেরও সীমাবদ্ধতা আছে। আমরা চালের বাজারে অভিযান পরিচালনা করছি। ডিম, মুরগির দাম অস্বাভাবিক থেকে একটা পর্যায়ে নিয়ে এসেছি। একসঙ্গে তো এতকিছু নিয়ন্ত্রণ করা একটু কঠিন। তাছাড়া আজকেই তো দাম বাড়ল। আমরা এক-দুইদিন একটু বাজারটা দেখি। এরপর ব্যবস্থা নেবো।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) থেকে তেলের দাম বাড়ার বিষয়টি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছে মিল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন।

সংগঠনের বিজ্ঞপ্তিতে বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৭ টাকা করে বাড়ানোর কথা জানানো হয়েছে।

ডলারের দাম বাড়ায় সম্প্রতি ভোজ্যতেলের দাম সমন্বয়ে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) কাছে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন।

বিটিসিসির কাছে পাঠানো চিঠিতে লিটারে ২০ টাকা বাড়িয়ে সয়াবিন তেলের দাম ১৮৫ টাকা থেকে ২০৫ টাকা করার প্রস্তাব দেন মিল মালিকরা।

এছাড়া খোলা সয়াবিন তেল ১৬৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৮০ টাকা এবং পাঁচ লিটারের বোতল ৯১০ টাকা থেকে ৯৬০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়।

বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বলছে, টাকার বিপরীতে মার্কিন ডলারের দাম ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এছাড়া ভোজ্যতেলের আমদানি মূল্য বেড়ে গেছে। ডলারের বাড়তি দাম অনুযায়ী তেলের দাম সমন্বয়ের জন্য ৩ আগস্ট প্রস্তাবনা পাঠানো হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দাম বাড়ানোর এ সিদ্ধান্ত এসেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০২২
এমকে/এনএইচআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।