ঢাকা, শনিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ মে ২০২৪, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

আয়ুর্বেদিক ওষুধের আড়ালে মাদক মেশানো পানীয় উৎপাদন, আটক ৬ 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০২২
আয়ুর্বেদিক ওষুধের আড়ালে মাদক মেশানো পানীয় উৎপাদন, আটক ৬ 

ঢাকা: আয়ুর্বেদিক ওষুধের আড়ালে মাদক মিশ্রিত পানীয় উৎপাদন ও বিক্রির অভিযোগে অন্যতম মূলহোতাসহ ছয়জনকে আটক করেছে র‌্যাব।

আটক ব্যক্তিরা হলেন- মূলহোতা মো. ওয়াজেদ ইসলাম শান্ত (২০), মো. রাসেল (২৯), মো. হৃদয় (২৯), মো. মুরসালিন আহম্মেদ (১৮), সবুজ মিয়া (১৮), ও মো. নান্টু (৫২)।

 

মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) দিনগত রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিক অভিযানের মাধ্যমে তাদের আটক করা হয়। অভিযানে বিপুল পরিমাণ বিভিন্ন মাদক ও যৌন উত্তেজক দ্রব্যাদি মিশ্রিত পানীয় উদ্ধার করা হয়।  

র্র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সম্প্রতি আমরা বেশ কিছু অভিভাবকদের কাছ থেকে অভিযোগ পাই যে কামরাঙ্গীরচরে খোলা মোরা জায়গায় একটি দোকানে আয়ুর্বেদিক ওষুধের আড়ালে এক প্রকার পানীয় বিক্রি করা হয়। তাদের ছেলেরা এ আয়ুর্বেদিক ওষুধের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে। তা খাওয়ার পর মাদকাসক্তদের মতো আচারণ করে থাকে বলেও অভিভাবকরা জানান।  

এমন তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-২ এর গোয়েন্দা দল গোপনভাবে আয়ুর্বেদিক ওষুধের দোকান থেকে ওষুধ সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠায়। সেগুলো পানীয়ের মধ্যে গাঁজা, ইয়াবা, ডান্ডি তৈরিতে ব্যবহৃত টলুইন নামক নামক ‘ক’ শ্রেণির মাদকের উপস্থিতি পাওয়া যায়। এছাড়া তীব্র ঘুমের ওষুধ ও যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধির বিভিন্ন উপকরণ, এসিড জাতীয় দ্রব্যাদিসহ বিভিন্ন দাহ্য পদার্থের উপস্থিতি পাওয়া যায়, যা পান করলে কিডনি রোগসহ নানা রকম জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।  

তিনি আরও বলেন, এরই পরিপ্রেক্ষিতে রাজধানীর নারিন্দায় অবস্থিত কারখানায় এবং কামরাঙ্গীরচর, কাটাবন, নাজিরা বাজার, গুলিস্তান, পুরান ঢাকার বিভিন্ন আউটলেটে অভিযান চালিয়ে আয়ুর্বেদিক/ভেষজ ওষুধের আড়ালে মাদক মিশ্রিত পানীয় উৎপাদন ও বিক্রির অন্যতম মূলহোতা ওয়াজেদ ইসলাম শান্তসহ (২০) ছয়জনকে আটক করা হয়। অভিযানে তিন হাজার ৫০০ বোতল বিভিন্ন প্রকার মাদক মিশ্রিত পানীয়, ওষুধ তৈরির কাজে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত ইয়াবার গুঁড়া ও গাঁজা সদৃশ্য বস্তুসহ বিভিন্ন উপাদান জব্দ করা হয়।  

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা যায় যে তারা ফার্মেসির নামে লাইসেন্স নিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে  আয়ুর্বেদিক ওষুধ বিক্রির আড়ালে মাদক ও যৌন উত্তেজক দ্রব্যাদি মিশ্রিত পানীয় প্রস্তুত ও বিক্রি করে আসছিলেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তিরা জানান, কথিত আয়ুর্বেদিক পানীয়র প্রতি বোতলের দাম ১৬০ টাকা থেকে ২০০ টাকা। তারা গত দুই-তিন বছর ধরে আয়ুর্বেদিক ওষুধের মোড়কে ক্ষতিকর ও নেশা জাতীয় পানীয় উৎপাদন ও বিক্রি করতেন।  



আরও পড়ুননারিন্দায় মাদকবিরোধী অভিযান চলছে 

রাজধানীর নারিন্দায় অবস্থিত কারখানায় এসব পানীয় উৎপাদন করে কামরাঙ্গীরচর, কাটাবন, নাজিরা বাজার, গুলিস্তানসহ বিভিন্ন জায়গায় আউটলেটের মাধ্যমে পানীয়টি বিক্রি করে থাকে এ প্রতারক চক্রটি। রাজধানীর বিভিন্ন আউটলেট থেকে প্রতিদিন তিন-চারশ’ বোতল মাদক মিশ্রিত পানীয় বিক্রি হতো বলে জানান আটক ব্যক্তিরা, যোগ করেন এ কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা গেছে, তারা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে কারখানার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। বিভিন্ন সময়ে বাসা পরিবর্তনের মাধ্যমে অবস্থান পরিবর্তন করত চক্রটি। কম দামে নেশা জাতীয় দ্রব্যাদির উপস্থিতি থাকায় তরুণ সমাজের মধ্যে পানীয়টির চাহিদা বৃদ্ধি পায়। তাই তারা এগুলো তৈরি ও বিক্রি করে আসছিলেন।  

আটক ব্যক্তিদের ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।  

বাংলাদেশ সময়: ০১৩৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০২২
এসজেএ/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।