ফেনী: দুই ছেলেকে অনেক কষ্ট বড় করেছিলেন চট্টগ্রামের মিরসরাইয় উপজেলার বাসিন্দা শামসুদ্দীন। তারা উপার্জন করতে শুরু করেছিলেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় উপজেলার সদর ইউনিয়নের গড়িয়াইশ গ্রামে সুমন ও ফরিদের জানাজা শেষে দাফন হয়। জানাজার সময় দিশেহারা শামসুদ্দীন আহাজারি করতে থাকেন। তার কান্না দেশে কাঁদেন উপস্থিত স্থানীয়রাও।
শামসুদ্দীন বলেন, এভাবে আমার বুক খালি করে দুই ছেলে চলে যাবে কখনও চিন্তা করতে পারিনি। আমি এখন কাকে নিয়ে বাঁচবো। ছোট ছোট নাতি-নাতিনদের কী হবে? আপনারা আমার ছেলেদের মাফ করে দেবেন।
এলাকার বাসিন্দা নুরুল মোস্তফা বলেন, সুমন ও ফরিদ সব সময় একসঙ্গে চলাচল করতেন। এলাকার কারও সঙ্গে তাদের দুই কথা হয়নি কখনও। তাদের দুই ভাইয়ের সুন্নতে খৎনাও একসঙ্গে হয়েছে; বিয়েও একসঙ্গে হয়েছে। তারা মারাও গেল একসঙ্গে। বিষয়টি মানতেও কষ্ট হচ্ছে।
শেখ ফরিদের রাহিম (৪) ও তাসফিয়া নামে দুটি সন্তান রয়েছে। সুমনের ছেলের নাম নিশাদ (৭), মেয়ের নাম মারিয়া (৪)।
নিহত দুই ভাইয়ের বাড়ি গিয়ে দেখা যায় তাদের মা নুরজাহান বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন। উপস্থিত আত্মীয়-স্বজনরাও কষ্টে কথা বলতে পারছেন না।
জানা গেছে, বুধবার রাত ১১টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাইয়ের সোনা পাহাড় ফিলিং স্টেশন থেকে বের হওয়ার পর একটি লরিকে চট্টগ্রামগামী জোনাকি পরিবহনের একটি বাস ধাক্কা দেয়। খবর পেয়ে সেখানে যান হাইওয়ে পুলিশের দায়িত্বরত কর্মকর্তা সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মোস্তফা। তিনি সেখানকার লোকজনের সঙ্গে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। এ সময় সেখানে ছিলেন ফরিদ ও সুমন।
এমন সময় ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী একটি কাভার্ডভ্যান দ্রুত সেখান দিয়ে যাওয়ার সময় দাঁড়ানো সবাইকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই ৪ জন নিহত হন। নিহতদের দুজন ফরিদ ও সুমন। আহত অবস্থায় এএসআই মোস্তফাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সেখানে তিনিসহ আহতদের চিকিৎসা চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২২
এসএইচডি/এমজে