সিলেট: কাঠ ও ধানের গুড়ার সঙ্গে লাল রং মিশিয়ে মরিচ; এসব উপকরণের সঙ্গেই বাসন্তী (হলুদ) রং ঢেলে তৈরি হতো হলুদের গুড়া। চালের গুড়ায় বাদামি রং মিশিয়ে তৈরি করা হতো ধনিয়া গুড়া।
সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে একটি জীর্ণশীর্ণ টিনের ঘরে প্রায় পাঁচ বছর ধরে চলছিল অবৈধ এ কর্মপন্থা। বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালায় ভোক্তা অধিদপ্তর ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার লালাবাজারের ঝর্ণা মসলা মিল নামে কারখানাটিকে ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ এর ৪১ ও ৪২ ধারায় ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
জানা গেছে, ভোক্তা অধিদপ্তর ও র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে কারখানার পেছনের ডোবা ব্যবহার করে পালিয়ে গেছে সেখানকার অধিকাংশ শ্রমিক। কিন্তু ধরা পড়েন ফজলুল হক নামে একজন। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কারখানাটির অবৈধ কার্যক্রমের ব্যাপারে জানতে পারে ভোক্তা অধিদপ্তর ও র্যাব।
ফজলুল হক নিজেদের অপকর্মের ব্যাপারে স্বীকার করেন একই সঙ্গে কারখানার মালিকদের ব্যাপারেও তথ্য দেন। পরে কারখানার মালিক নাজিম উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভোক্তা অধিদপ্তর। তিনি সিলেটের বাইরে আছেন জানিয়ে নিজের ছোট ভাইকে কারখানায় পাঠান।
নাজিমের ভাই কারখানায় এলে ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ এর ৪১ ও ৪২ ধারায় ঝর্ণা মসলা মিলকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি ভবিষ্যতে এ কারখানা কখনই ভেজাল মসলা উৎপাদন করা হবে না মর্মে মুচলেকা নেওয়া হয়।
অভিযানের সময় কারখানা থেকে ২০০ বস্তা ভেজাল মসলা ও ১২ ব্যাগ ক্ষতিকর রাসায়নিক রং জব্দ করা হয়। পরে এলাকাবাসীর উপস্থিতে সব মসলা ও রং ধ্বংস করা হয়।
ভোক্তা অধিদপ্তরের সংরক্ষণ অধিদপ্তর সিলেটের সহকারী পরিচালক মো. আমিরুল ইসলাম মাসুদ বাংলানিউজকে বলেন, কাঠ-ধান-চালের গুড়ায় রং মিশিয়ে হলুদ-মরিচ-ধনিয়া উৎপাদন করছিল ঝর্ণা মসলা মিল। ভয়ঙ্কর এ প্রতারণার দায়ে প্রতিষ্ঠান মালিককে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি কারখানাটিতে মসলা উৎপাদনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২২
এনইউ/এমজে