ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ মে ২০২৪, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসনের সাব-মার্সিবল পাম্পে ওঠে ময়লা পানি!

মো. রোমান আকন্দ, ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২২
অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসনের সাব-মার্সিবল পাম্পে ওঠে ময়লা পানি!

শরীয়তপুর: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার নাগেরপাড়া, সামন্তসার, ইদিলপুর ও নলমুড়ি ইউনিয়নে আবাসন নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।  

এছাড়া এ প্রকল্পের আওতায় মাত্র ১২০ থেকে ১২৫ ফুট গভীরতায় স্থাপন করা সাব-মার্সিবল পানির পাম্পে সুপেয় পানি উঠছে না।

আর্সেনিক, লবণ ও দুর্গন্ধযুক্ত লাল পানি বের হওয়ায় এসব অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের মধ্যে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে।  

এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

গোসাইরহাটের সামন্তসার ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী পেদার বাড়ি গিয়ে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন আগে তার বাড়িতে সাব-মার্সিবল পানির পাম্প স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু এ পাম্পের পানি পান করা তো দূরের কথা, অন্যান্য গৃহস্থালীর কাজেও ব্যবহার করা যায় না।  

ওমর আলী পেদা জানান, পাম্প চালু করলেই আর্সেনিক, লবণ ও দুর্গন্ধযুক্ত লাল পানি বের হচ্ছে। খাওয়া তো দূরের কথা, এ পানি দিয়ে হাঁড়ি-পাতিল ধোয়াও সম্ভব হচ্ছে না।  

তার স্ত্রী রেনু বেগম ও মেয়ে তামান্না বলেন, ঘর নির্মাণেও নিম্নমানের ইট, সুরকি ব্যবহার করা হয়েছে। দরজা-জানালায় সস্তা গ্রিল ও কাঠ ব্যবহার করা হয়েছে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানানোর পর  এখন ঘর নির্মাণ কাজই কয়েক মাস ধরে বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে আমাদের বসবাস করতে অনেক কষ্ট হচ্ছে।  

একই অভিযোগে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন একই ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের চর-সামন্তসার গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমান।

জানা গেছে, গোসাইরহাট উপজেলায় অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ২৫টি আবাসন নির্মাণ করা হয়েছে। এ রকম অভিযোগ অধিকাংশ অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধার আবাসন নির্মাণের ক্ষেত্রেই পাওয়া গেছে।

গোসাইরহাট উপজেলা জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নাগেরপাড়া, সামন্তসার, ইদিলপুর ও নলমুড়ি ইউনিয়নে সুপেয় আর্সেনিকমুক্ত নিরাপদ পানি পেতে হলে এসব এলাকায় ২৪০ থেকে ২৬৫ মিটার গভীরতায় নলকূপ স্থাপন করতে হবে।

এসব অভিযোগ সম্পর্কে গোসাইরহাট উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার বলেন, সাব-মার্সিবল পানির পাম্প স্থাপনের ক্ষেত্রে আমাদের কোনো হাত নেই। এটা ঢাকার হেড অফিস থেকে ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে গোসাইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাফী বিন কবির বলেন, সাব-মার্সিবল পানির পাম্পে সুপেয় পানি না ওঠার বিষয়ে ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এসব অভিযোগ সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষকে জানিয়েছি।

মোবাইল ফোনে প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এম ইদ্রিস সিদ্দিকীর কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা সুপেয় নিরাপদ পানি না পেলে, আমরা সুব্যবস্থা করবো।      

বাংলাদেশ সময়: ২০২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।