বরিশাল: বাড়ির কাজ (হোম ওয়ার্ক) সঠিকভাবে করে না নেওয়ায় অতিরিক্ত পানি পান করিয়ে শাস্তি দেওয়া হয়েছে তৃতীয় শ্রেণির বেশ কয়েকজন শিশু শিক্ষার্থীকে। এ ঘটনা ঘটেছে বরিশাল কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
অভিযোগ রয়েছে- অতিরিক্ত পানি পান করার কারণে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়লে বিষয়টি অভিভাবকরা জানতে পারেন। পরে তারা কর্তৃপক্ষকে জানালে অধ্যক্ষ প্রফেসর খোন্দকার অলিউল ইসলাম নিজে অসুস্থ শিক্ষার্থীদের খোঁজ খবর নিতে শুরু করেন এবং সবার বাড়িতে যান।
কথা হলে তিনি বলেন, আমাদের এ বিদ্যালয়ের সভাপতি জেলা প্রশাসক মহোদয়। বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা তাকে অবগত করেছি। এছাড়া অসুস্থ হয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে তিনজন আজ ক্লাশে এসেছে। আর বাকি দু’জন বিদ্যালয়ে আসেনি। তাদের খোঁজ নেওয়া হয়েছে।
মামুন নামের ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হবে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক (ইংরেজী) মনোয়ারুল ইসলাম মামুন বলেন, শিক্ষার্থীদের ওইভাবে কোনো শাস্তি দেওয়া বা চাপ দিয়ে পানি পান করানোর ঘটনা ঘটেনি। যারা বাড়ির কাজ করে আনেনি, তাদের সঙ্গে ফান করে পানি পান করার জন্য বলা হয়েছিল। তাও আবার তাদের নিজেদের পট থেকে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা বেশি পানি পান করে ফেলবে তাও বুঝতে পারিনি।
ফান করে অতিরিক্ত পানি পান করানোটা কতটা যুক্তিযুক্ত ছিল জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেননি। তবে তিনি বলেন, যেভাবে বিষয়টি উপস্থাপন হচ্ছে ঘটনা আসলে তেমন নয়। বাচ্চাদের শাস্তি আমি কখনও দেই না, আমি ওদের সঙ্গে সব সময়ই ফান করি।
এদিকে অভিভাবকরা জানান, হোমওয়ার্ক না আনার জন্য তাদের সন্তানদের এমনভাবে পানি পান করানো হয়েছে যে তাদের বমিও হয়েছে। এটা কোনো শাস্তি হতে পারে না।
অসুস্থ হয়ে পড়া এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক শাহানাজ পারভীন বলেন, অতিরিক্ত পানি পান করতে গিয়ে আমার সন্তান এমনভাবেই অসুস্থ হয়েছে, ফলে সে আজ বিদ্যালয়ে যেতে পারেনি।
অপর এক সন্তানের বাবা মাহামুদুন নবী সুমন বলেন, মামুন স্যার আমার সন্তানকে অতিরিক্ত পানি পান করতে বাধ্য করেন। আমরা নির্ধারিত পটে নির্দিষ্ট পরিমাণের পানি দিয়ে দেই, কিন্তু একবারেই তার থেকে বেশি পানি পান করতে হয়েছে আমার ছেলেসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে।
তিনি বলেন, শিক্ষকের ভয়ে আমার ছেলে বাসায় গিয়ে বিষয়টি বলেওনি। আজ বুধবার সকালে অন্য এক শিশুর (অসুস্থ শিক্ষার্থী) বাবা (সরকারি কর্মকর্তা) যখন বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধানের কাছে অভিযোগ দিতে উদ্যত হন তখনই অভিভাবকদের নজরে আসে বিষয়টি। এ ধরনের শাস্তি মেনে নেওয়া যায় না। আমরা চাই এ ঘটনার বিচার হোক।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২২
এমএস/জেডএ