ঢাকা: এমআরটি-১ প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বহুজাতিক কনসোর্টিয়ামের নিপ্পন কোআই কর্পোরেশন কোম্পানি জেভির সঙ্গে চুক্তি সই হয়েছে। এ কনসোর্টিয়ামের অন্তর্ভুক্ত রয়েছে দেশি-বিদেশি ৮টি প্রতিষ্ঠান।
রোববার (২৩ অক্টোবর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড আয়োজিত এমআরটি লাইন-১ (মেট্রোরেল) এর নির্মাণ কাজ তদারকির জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সই হয়।
চুক্তিতে সই করেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক এবং নিপ্পন কোয়াই কোম্পানি লিমিটেডের প্রতিনিধি নাও কি কুদো।
পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫১৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এরমধ্যে জাইকা অর্থায়ন করছে ১ হাজার ১২৩ কোটি টাকা ও বাংলাদেশ সরকার অর্থায়ন করছে ৩৯৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজন স্মার্ট যানবাহন। পৃথিবী এগিয়ে চলেছে আমরা পিছিয়ে থাকতে পারি না। আগামী ডিসেম্বরে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের স্বপ্নের প্রজেক্ট এমআরটি লাইন-৬ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন। প্রথম অংশ এসময় উদ্বোধন করা হবে।
২০৩০ সালে ছয়টি এমআরটি লাইন আমরা তৈরি করবো।
জাপানকে ধন্যবাদ জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, জাপানের মাধ্যমে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা এগিয়ে চলেছে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক বলেন, জনসাধারণ, সাংবাদিক সহ সকল অংশীজনের সহযোগিতা ছাড়া জনবহুল বাংলাদেশে এমআরটি লাইন-৬ বাস্তবায়ন সম্ভব ছিল না।
ইচি গুচি তমু হিতে বলেন, জাপান-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক এ প্রকল্পের মাধ্যমে আরও এগিয়ে যাবে। মাতারবাড়ী প্রজেক্ট, শীতলক্ষ্যা সেতু। এমআরটি-১ বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
জাপান-বাংলাদেশ ঐতিহাসিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৯৭৩ বাংলাদেশের সাথে জাইকার যে দীর্ঘ সম্পর্ক তার সূচনা হয়। বর্তমানে বিভিন্ন সেক্টরের বিভিন্ন প্রকল্পে জাপান অর্থায়ন করছে। জাইকা বর্তমানে বাংলাদেশের ২য় বৃহত্তম উন্নয়ন সহযোগী।
ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট (লাইন-১) প্রকল্পের বাস্তবায়ন করছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড। এ প্রকল্প ব্যয় মোট ব্যয় ৫২,৫৬১.৪৩ কোটি টাকা।
এরমধ্যে প্রকল্প সহায়তা বাবদ জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) অর্থায়ন করছে ৩৯ হাজার ৪৫০ কোটি ৩২ লাখ টাকা। বাকি ১৩ হাজার ১১১ কোটি ১১ লাখ টাকা দেবে বাংলাদেশ সরকার।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু হওয়া এ প্রকল্প ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে শেষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
২০২৬ সালে এমআরটি লাইন-১ চালু হলে দৈনিক ৮ লাখ যাত্রী পরিবহন সক্ষমতা তৈরি হবে।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরীর সভাপতিত্বে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি রওশন আরা মান্নান, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাইকা অফিসের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইচিগুচি টমোহাইড, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক।
প্রসঙ্গত, এমআরটি-১ দেশের পরিবহন খাতের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রকল্প।
এমআরটি-১ প্রকল্পের অধীনে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১৬ দশমিক ২১ কিলোমিটার আন্ডারগ্রাউন্ড এবং কুড়িল থেকে পূর্বাচল ডিপো পর্যন্ত ১১ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার এলিভেটেড বা উড়াল সেতু তৈরি করা হবে।
এছাড়া নতুন বাজার থেকে কুড়িল পর্যন্ত ৩ দশমিক ৬৫ কিলোমিটার আন্ডারগ্রাউন্ড ট্রানজিশন লাইনসহ ৩১ দশমিক ২৪ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হবে। এই মেট্রোরেলের ১২টি স্টেশন থাকবে মাটির নিচে এবং ৭টি থাকবে উড়াল সেতুর ওপর।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০২২
এনবি/এজে