ঢাকা, সোমবার, ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৭ মে ২০২৪, ১৮ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

আগামী বছর থেকে শতভাগ সৌদি ইমিগ্রেশন ঢাকায় হবে: ধর্ম প্রতিমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২২
আগামী বছর থেকে শতভাগ সৌদি ইমিগ্রেশন ঢাকায় হবে: ধর্ম প্রতিমন্ত্রী

ঢাকা: সৌদি সরকারের সঙ্গে ইমিগ্রেশনের চুক্তি হয়েছে উল্লেখ করে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেছেন, আগামী বছর থেকে শতভাগ যাত্রী সৌদি আরবের ইমিগ্রেশন ঢাকায় হজ্জ ক্যাম্প থেকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করে যেতে পারবেন।

বুধবার (১৬ নভেম্বর) রাজধানীর আশকোনা হজ্জ ক্যাম্পে বিভাগীয় ইমাম সম্মেলন, মাউশিক প্রকল্পের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক-কেয়ারটেকার ও সর্বোচ্চ যাকাত সংগ্রহকারী কর্মকর্তাদের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

সরকারের ইসলামবান্ধব কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ইসলামের প্রচার ও প্রসারে অসংখ্য কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। তিনি প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন, আল কুরআন ডিজিটাইজেশান (আল কোরআনঃ ডিজিটাল), ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও সম্প্রসারণ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন লাইব্রেরি ভবন নির্মাণ, হজ ব্যবস্থাপনায় ডিজিটাল সুবিধা চালুকরণ, হজ্জে গমনেচ্ছু ব্যক্তিরা অনলাইনে সারা বছর হজের প্রাক-নিবন্ধন ও নির্দিষ্ট সময়ে নিবন্ধন সম্পন্নকরণ, জেদ্দা হজ টার্মিনালে ‘বাংলাদেশ প্লাজা’ স্থাপন, ঢাকা আশকোনা হজ ক্যাম্পের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি, মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে আলেম-ওলামাদের কর্মসংস্থান, মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা এবং কুরআন শিক্ষা কার্যক্রমে নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি, জাতীয় শিক্ষানীতিতে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমকে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্তি, কওমী শিক্ষার্থীদের দাওরায়ে হাদীস সনদকে মাস্টার্স সমমান প্রদান, ১০০০টি বেসরকারি মাদ্রাসায় একাডেমিক ভবন নির্মাণ, ৮০টি মাদ্রাসায় অনার্স কোর্স চালুকরণ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশের আলেম-ওলামাদের ভূমিকার প্রশংসা, ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা এবং দারুল আরকাম মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠাসহ আরও অনেক কাজ করেছেন।

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রপ্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে দেশেই গিয়েছেন মন্ত্রী, সচিব আমলাদের প্রশংসা করেননি। তিনি প্রশংসা করেছেন আলেম-ওলামাদের ভূমিকা নিয়ে।

তিনি বলেন, আমি যদি আমার এলাকায় বক্তব্য দেই, মানুষ আমার কথা শুনবে। কিন্তু, কার্যক্ষেত্রে সেটি কতটুকু মানবে সেটা নিয়ে সন্দেহ আছে। কিন্তু আপনারা যদি মসজিদে কোনো বিষয়ে কথা বলেন, সেটা মানুষ শুনবে। এবং সেটা অন্তর দিয়ে মানার চেষ্টা করবে।

ফরিদুল হক বলেন, ওলামাদের মাধ্যমেই সমাজ গঠন করা সবচেয়ে সহজ। যত বিষয় আছে, সব বিষয় নিয়ে আপনারা বক্তব্য রাখতে পারেন। এ জন্যই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

যাকাত উত্তোলন কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করে তিনি বলেন, আপনারা যেটা করেছেন, সেটা দেশ ও জাতির জন্য মঙ্গলজনক। আজকে আপনারা বিভিন্ন দাবি দাওয়া তুলে ধরেছেন। অতীতে কিন্তু দাবি ছাড়াই আমরা আপনাদের দাবি পূরণে কাজ করেছি। সর্বক্ষেত্রেই আপনাদের কাজ করার সুযোগ আছে।

তিনি বলেন, আগে দেশে দারিদ্রসীমা ৪২ শতাংশ ছিল, এখন সেটি ২০.৫ শতাংশে নেমে এসেছে। সরকার দারিদ্র্যসীমার নীচে আনার জন্য চেষ্টা করছে, পাশাপাশি ইসলামিক ফাউন্ডেশন যদি চেষ্টা করে, বিরাট একটা অংশ আমরা দারিদ্র‍্যসীমার নীচে নামিয়ে আনতে পারি। আজকে যাদের পুরস্কৃত করা হলো, আশা করি আগামী দিনেও তারা আরও বেশী ভূমিকা রাখতে পারবেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম বলেন, টাকা-পয়সা গাড়ি, বাড়ি, নারী এগুলোর প্রতি যত আকর্ষণ বাড়বে, স্রষ্টার প্রতি আকর্ষণ তত কমবে। এটাকে বলে ডিটাচমেন্ট। আর, এটা করার জন্য একমাত্র উপায় হচ্ছে যাকাত দেওয়া। আমরা যারা মুসলমান তারা ছোটবেলায় সবাই মসজিদে পড়েছি। এজন্য আমি মনে করি, একজন মুসলমান সারা জীবন মুসলমান করে রাখার এই মহান দায়িত্ব মাউশিক শিক্ষক-কেয়ারটেকারদের। সরকার হয়ত তাদের কম দাম দেয়, কম বেতন দেয়৷ কিন্তু, আমি মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে অনুরোধ করব এই বিষয়ে খেয়াল রাখার জন্য। আজকে আমাদের সমাজের যুবক-কিশোরদের নৈতিক অবক্ষয়ের মূল কারণ ধর্ম থেকে দূরে সরে যাওয়া।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমে প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ফারুক আহমেদ বলেন, আমাদের যে যাকাত আদায় কার্যক্রম এটা একটা চলমান কার্যক্রম যা প্রতিবছরই বাড়ছে। সরকারের যে দারিদ্র‍্য বিমোচন কর্মসূচি আছে এগুলো বাস্তবায়নে যাকাতের একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এখানে যারা কাজ করেছেন, আশা করব ভবিষ্যতেও যেন এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব আল্লামা মুফতি রুহুল আমীন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. মুনিম হাসান।

পরে, বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সর্বমোট ১০৮ জনকে পুরস্কৃত করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২২
এমকে/এসএ


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad