প্রতি ছয়জনের মধ্যে একজন তরুণই দিনে অন্তত দু’বার ফাস্টফুড গ্রহণ করে। তাদেরকে ‘ফাস্টফুড প্রজন্ম’ আখ্যা দিয়ে প্রজন্মভিত্তিক খাদ্যাভ্যাসের বিষয়ে বিবিসির একটি জরিপে বলা হয়েছে, ‘বয়স্কদের সঙ্গে ১৬ থেকে ২০ বছর বয়সীদের মধ্যে খাদ্যাভ্যাসে জেনারেশন গ্যাপ তৈরি হয়েছে’।
‘বিবিসি গুড ফুড নেশন’ শীর্ষক ওই জরিপ করা হয়েছে ৫ হাজার মানুষের মধ্যে। জরিপে দেখা গেছে, ১৬ থেকে ২০ বছর বয়সী তরুণদের মধ্যে প্রতি ছয়জনের মধ্যে একজন তরুণই দিনে অন্তত দু’বার বার্গার-পিজার মতো ফাস্ট ফুড গ্রহণ করে। কিন্তু ২১ থেকে ৩৪ বছর বয়সীদের মধ্যে এ হার প্রতি আটজনে একজন। আর বড়রা সপ্তাহে দু’দিন ফাস্টফুড খান।
তবে জরিপ এটাও বলছে যে, তরুণদের মাত্র ৬ শতাংশ তাদের বর্তমান খাদ্যাভ্যাসে সন্তুষ্ট।
গবেষণা থেকে জানা গেছে যে, জরিপের অন্তর্ভুক্ত মানুষদের মধ্যে অর্ধেকেরই চিন্তা- ‘মাংস ছাড়া একটি খাবারও নয়’।
জরিপে দেখা গেছে, ১৬ থেকে ২১ বছর বয়সীদের ২১ শতাংশ পুরুষ এবং ৩২ শতাংশ নারী দিনে অন্তত তিনবার মাংস খান।
স্বাস্থ্য বিভাগ দিনে ৭০ গ্রামের বেশি মাংস না খাওয়ার পরামর্শ দেয়। কিন্তু জরিপে অংশ নেওয়া এক চতুর্থাংশ মানুষেরই খাবারের পরিমাণ এর অন্তত দ্বিগুণ।
বয়স্করাও এখন দিনে অন্তত দু’বার মাংস আহার করেন এবং মাসে মাত্র ছয়দিন মাংসমুক্ত থাকেন।
বিবিসি ভালো খাবার ব্র্যান্ডের সম্পাদকীয় পরিচালক ক্রিস্টিন হায়েজ ওই গবেষণার ফলাফলের ভিত্তিতে বলেছেন- ‘একজন সচেতন মানুষ মাংসের পরিমাণ সীমিত রেখে একটি সুষম ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার উপভোগ করতে পারেন’।
তিনি আরও বলেন, ‘যারা মাংস খান, তারা এখনও শুধু ছুটির দিনে রোস্ট রান্না করতে পারেন এবং যখন মাংসমুক্ত খাবার গ্রহণ করেন তখন অনিয়মিত স্টিক যুক্ত করতে পারেন’।
খাদ্যাভ্যাসের ওপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাবও লক্ষ্য করা গেছে জরিপে। গবেষণায় দেখা গেছে, ২১ থেকে ৩৪ বছর বয়সীদের মধ্যে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে দু’জন তাদের রান্না করা খাবারের ছবি ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক নেটওয়ার্কিং সাইটগুলোতে পোস্ট করেছেন।
রেস্টুরেন্টে খাওয়ার পর তৃতীয় একটি খাবারের ছবি তারা পোস্ট করেছেন। আর এক তৃতীয়াংশ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি খাবারের ছবি দেখার পর রান্নায় অনুপ্রাণিত হয়েছেন।
এ বয়সীদের মধ্যে ৪৩ শতাংশ তাদের মোবাইল ফোনের ইন্টারনেটের সাহায্যে খাবারের রেসিপি অনুসন্ধান করেন আর ২৬ শতাংশ তাদের ফোনে ভিডিও রেসিপি অনুসরণ করেন। খাদ্য কেনার বিষয়ে সমান সংখ্যক মানুষ ইউটিউব থেকেও অনুপ্রাণিত হন।
জরিপের অন্যান্য তথ্যে বলা হয়েছে, প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এক চতুর্থাংশের বেশি মানুষ সব সময় বা প্রায় সব সময় ব্রেকফাস্ট এড়িয়ে যান।
আর ২১ থেকে ৩৪ বছর বয়সীদের মধ্যে প্রতি চারজনের একজন বলেছেন, তারা অধিকাংশ সময় ব্রেকফাস্ট মিস করেন। এ বয়সের অনেক তরুণ দুপুরের খাবারও বাদ দিয়ে দেন।
এ প্রজন্মের ১৫ শতাংশ নিরামিশাষী হতে ও ৭ শতাংশ আমিষ গ্রহণে আগ্রহী। তবে ১৮ শতাংশ তাদের কেনা চর্বিজাতীয় খাবার নিয়ে উদ্বিগ্ন।
তবে এ প্রজন্মের সবচেয়ে বেশি ৮৬ শতাংশ দাবি করেছে, তারা নিয়মিত ব্যায়াম করা পছন্দ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০১৬
এএসআর