কুকুর যে তার প্রভু কি বলছেন সেটা বোঝে- গবেষণা করে বিজ্ঞানীরা তার আরও অনেক প্রমাণ পেয়েছেন। অনেক কুকুর মালিকদের বিশ্বাস স্থাপন করেছে নতুন এ গবেষণা।
এতে সমর্থন পাওয়া যায়, মানুষের সবচেয়ে বড় বন্ধু সত্যিই আমরা কি বলছি, তার কিছু বোঝে।
হাঙ্গেরিতে গবেষকরা কুকুরের ঘিলু স্ক্যান করে দেখেছেন, তারা তাদের প্রশিক্ষকের তথা শুনছিল। এক্ষেত্রে মস্তিষ্কের নির্ধারিত অংশের ব্যবহার করছিল তারা, যা মানুষের কথা বুঝতে সাহায্য করছিল।
বিজ্ঞানীরা দেখলেন যে, কুকুর মানুষের মতোই বাম মস্তিস্ক দিয়ে শব্দ শুনে প্রক্রিয়াজাত করে আর স্বরভঙ্গি প্রক্রিয়াজাত ডানদিকটা দিয়ে।
তারা দেখলেন, কুকুর যখন প্রশংসিত হচ্ছিল, শুধুমাত্র তখনই উৎসাহিত হচ্ছিল। শব্দ এবং স্বরভঙ্গি ইতিবাচক হলেও তা কুকুরদের জন্য উৎসাহব্যঞ্জক ছিল। উচ্চারিত অর্থপূর্ণ শব্দের সঙ্গে অর্থহীন শব্দের পার্থক্যও তাদেরকে আলাদা ধরনে প্রভাবিত করছিল।
সায়েন্স জার্নালে এ গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।
‘কুকুরের ঘিলু আমরা কি বলছি এবং কিভাবে বলছি- উভয় বিষয়েই যত্নশীল’- বলেন প্রধান গবেষক আত্তিলা অ্যানডিকস্। বুদাপেস্টের ইয়টভস্ লোরান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এই স্নায়ুবিজ্ঞানী আরও বলেন, ‘সমস্ত প্রশংসা একটি পুরস্কার হিসাবে কাজ করতে পারে, যদি শব্দ, অর্থ এবং স্বরভঙ্গি ইতিবাচক হয়’।
অ্যানডিকস্ বলেন, ‘এ অনুসন্ধান প্রমাণ করেছে, তথ্যও মানসিক ভাষা প্রসেস করার ক্ষমতা রাখে। কুকুরের পূর্ববিশ্বাসও অন্যান্য প্রজাতির চেয়ে তাকে আলাদা ও মানুষের সঙ্গে তাকে সম্পৃক্ত করেছে। কিছু ইতিবাচক শব্দের উদ্ভাবনও অন্য প্রাণীদের দূরে সরিয়ে মানুষের কাছে টেনেছে তাকে।
‘কুকুরের স্নায়ুর ধারণক্ষমতা শব্দ দিয়ে স্বতন্ত্র মানুষকে চিনতে সহায়তা করে। অন্য প্রজাতি থেকেও মানুষকে আলাদা করে তারা শব্দ প্রক্রিয়াজাত করার এ প্রাকৃতিক ক্ষমতা দিয়ে। এর মানে দাঁড়ায় যে, শব্দের ব্যবহার করতে পারার মধ্য দিয়ে মানুষের যে বড় পরিবর্তন ছিল, সেটি নিউরাল ধারণক্ষমতার বড় পরিবর্তন ছিল না’- বলেন তিনি।
তার মতে, ‘যদিও অন্যান্য প্রজাতিও কুকুরের মতোই মানুষের ভাষা বুঝতে সক্ষম হতে পারতো। কিন্তু মানুষের বাকশক্তির প্রতি আগ্রহের অভাব এটা কঠিন করে তোলে বলেও পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে’।
‘হাজার হাজার বছর ধরে মানুষের সঙ্গে সামাজিকভাবে যুক্ত কুকুর। তার মানে, তারা মানুষকে ভালোভাবেই জানে এবং মানুষ কিভাবে কি বলে- সে বিষয়ে মনোযোগী হয়’।
‘লক্ষ্যণীয় যে, সব কুকুর পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময় জাগ্রত, সচেতন ও সুখী ছিল। তারা স্বেচ্ছায় অংশগ্রহণ করেছে’- বলেন অ্যানডিকস্।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০১৬
এএসআর