বাবা-মার অনুপস্থিতিতে বাচ্চাদের দেখভাল করবার জন্য পশ্চিমা জগতে বেবি সিটার রাখার চল আছে। সেক্ষেত্রে তরুণী বা কম বয়সী মহিলাই সবার পছন্দ।
রস এলডার (৪০) ও তার নারীসঙ্গী সোফি একজন বয়স্ক নারী ‘গ্র্যানিসিটার’ চেয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিলেন। সপ্তাহে তিনদিন তাদের বুড়ি দাদিমার দেখভাল ও সঙ্গ দেবার জন্য। বিনিময়ে টেমস নদীতীরে তাদের বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে নিখরচায় থাকার সুযোগ এবং সেইসঙ্গে লোভনীয় বেতন।
বিজ্ঞাপনের ভাষা ছিল এমন: ‘‘একজন গ্র্যানিসিটার চাই। যার মনটা অনেক বড়। যার আছে অন্যদের যত্ন-আত্তি করার অভিজ্ঞতা, আছে সঙ্গীতপ্রীতি। ৯৩ বছর বয়সী দাদিমা মার্গারেটকে দেখভাল করার দায়িত্ব নিতে হবে। মার্গারেটের পছন্দ শব্দজটের খেলা, পিঠাপুলি তৈরি এবং পুরনো দিনের সুরাসঙ্গীত। ’’
বিজ্ঞাপনে অভূতপূর্ব-অবিশ্বাস্য সাড়াও মিলল। পোস্ট করবার পরপরই ২০০ জন আগ্রহী মহিলা ই-মেইল করলেন। এখন সেসব ই-মেইল প্রসেস করার মধুর কাজটি করছেন রস এলডার ও তার সঙ্গী।
‘‘আমরা এমন একজনকে চেয়েছিলাম যিনি আমাদের বাড়িটায় আরো বেশি প্রাণসঞ্চার করতে পারবেন। আমাদের আশা ছিল, আমরা এমন কাউকে ঠিকই খুঁজে পাবো যিনি নিজেই থাকার মতো এমনই একটা শান্তিময় ঠাঁই খুঁজছেন। যার আছে বৃদ্ধাদের দেখভাল করার অভিজ্ঞতা এবং যিনি গানে গানে মার্গারেটের মনকে চাঙ্গা রাখতে পারবেন। আমরা ভাবতেই পারিনি এমন সাড়া পাবো। ’’—বিবিসির কাছে নিজের অনুভূতি এভাবেই প্রকাশ করছিলেন ৯৩ বছর বয়সী দাদিমার যোগ্য নাতি রস।
রস আরও বলছিলেন, ‘‘ দু’বছর আগেও দাদিমা ছিলেন খুবই কর্মক্ষম আর প্রাণবন্ত। কিন্তু এরপর স্ট্রোক করলো তার। নিজে নিজে চলাফেরা করবার ক্ষমতা আর রইলো না। তখন একটাই উপায় খোলা ছিল, ওকে কোনো বৃদ্ধনিবাসে পাঠিয়ে দেওয়া। ’’
না, বৃদ্ধনিবাসে পাঠানোর চিন্তা মনপুত হলো রস এল্ডারের। দাদিমাকে চোখের আড়াল না করার বিকল্প চিন্তা মাথায় এলো তার। আর এই মহৎ ইচ্ছা থেকেই তিনি ভাবলেন বাড়িতেই রাখবেন তার দাদিমাকে। আর সেজন্যই দিলেন এই অভিনব বিজ্ঞাপন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০১৬
জেএম/এসএইচ