যে নামেই ডাকুন, আইসিস বা দায়েস নামের ধর্মোন্মাদ খুনে-জঙ্গি দলটি ইরাকে-সিরিয়ায় কী ভয়াবহ তাণ্ডবই না চালাচ্ছে। ওদের অত্যাচার নির্যাতন আর রক্তলোলুপতা সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে।
ওদের অত্যাচারে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ দুটির লক্ষ লক্ষ পরিবার আজ ধ্বংস হয়ে গেছে। তাদের সাজানো সংসার, ভিটেমাটি তছনছ হয়ে গেছে। মরুভূমির বালু হয়ে উঠেছে লাল। কিন্তু এসবের শিকার হতে হতে ইরাক-সিরিয়ার অসহায় দিশেহারা বিপন্ন মানুষও ফুঁসে উঠছে। এমনকি নারীরাও আইসিস-জল্লাদদের রুখে দাঁড়াতে হাতে অস্ত্র তুলে নিচ্ছে। পেশমার্গা ও ইয়াজিদি গোত্রের নারীরা প্রতিরোধ বাহিনীতে নাম লিখিয়ে এবার ওদের দিচ্ছে মারের বদলে পাল্টা মার। আর যেসব নারী যুদ্ধে নাম লেখায়নি তারাও কম যায় না। মওকা মতো তারাও প্রতিশোধ নিচ্ছে।
এমনই এক ইরাকি তরুণীর কথা জানিয়েছে ইরাকি টিভি চ্যানেল আল সুমাইরা। সোমবার চ্যানেলটি এক সচিত্র প্রতিবেদনে জানায়, ইরাকের সালাহউদ্দিন প্রদেশের অজ্ঞাতনামা এই তরুণী দুই আইসিস বর্বরকে গুলি করে হত্যা করেছেন। সম্প্রতি আইসিস জঙ্গিরা প্রতিশোধপরায়ণ নারীদের সম্ভাব্য আত্মঘাতী হামলার ভয়ে নারীদের প্রকাশ্যে হিজাব, বোরখা ও নেকাব পরায় নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করেছে। ওই তরুণী তবু হিজাব-নেকাব পরেই মসুল শহরের একটি আইসিস চেকপয়েন্টের সামনে হাজির হন। তার হিজাবের আড়ালে অস্ত্র লুকানো ছিল। চেকপয়েন্টে ডিউটিরত দুই আইসিস জঙ্গি তাকে চ্যালেঞ্জ করামাত্র অস্ত্র বের করে তিনি ওদের দেহ গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেন।
গত এক মাসে ইরাকের মসুল শহরে এরকম ঘটনা এটি নিয়ে তৃতীয়। নারীরা যেভাবে একের পর এক আইসিস জঙ্গিদের শায়েস্তা করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠছেন তাতে আইসিসের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে---‘‘This phenomenon has raised ISIS [Daesh] concerns during the past weeks."
সোমবারের ঘটনার পর আতঙ্কিত আইসিস কর্মকর্তারা ‘এমন হামলা আরও ঘটতে পারে’ মর্মে এক বিবৃতি জারি করে সম্ভাব্য ‘নারী-সৃষ্ট বিপদ’ থেকে সতর্ক থাকতে তাদের সব সদস্যকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০১৬
জেএম/আরআই