মানুষের বাচ্চা আর পশু-পাখির শাবকের মধ্যে কীইবা আর ফারাক! শিশু তো শিশুই। সবারই মায়াজড়ানো, চোখজুড়ানো, মনভরানো চেহারা।
বাড়িয়ে বলিনি। ওদের দেখামাত্র মন ভালো হয়ে যাওয়ার কথা কিন্তু একটি ভারতীয় পত্রিকা লিখতে ভুল করেনি: ‘‘These adorable sleeping owls huddled together in a line will make you feel as warm and fuzzy as they look.’’
আর শিরোনামটাও দিয়েছে বেশ:‘‘Baby owls snoozing are seriously cute’’
ছবিতে দেখুন এই পাঁচটা পিচ্চি পেঁচকছানা কী সুন্দর একে অপরের গায়ে-গা লাগিয়ে ঘুমকাতুরে চোখ বুজে হাল্কা নিদ্রার আমেজ নিচ্ছে। নিজেদের মধ্যে ওদের ওদের মিলমিশটাও যে বেশ পোক্ত সেটাও ছবিই বলে দেয়। যাকে বলে গলায় গলায় দোস্তি! সংখ্যায় ওরা পাঁচজন বলে ওদের আপনি ‘পঞ্চ পেঁচক পাণ্ডব’ বললেও কেউ আপত্তি করবে না।
ভারতের মধ্যপ্রদেশের কানহা জাতীয় উদ্যান থেকে পাঁচ পেঁচকশিশুর এই দুর্লভ সুন্দর ছবিটি তুলেছেন অমিত সুরেন্দ্র বন্দে নামের ৩৪ বছর বয়সী এক যুবক।
প্রকৃতিতে পেঁচাদের মধ্যে মৈত্রীর বন্ধনটা খুবই মজবুত হয়। প্যাঁচারা নিজেদের গোত্রের সদস্যদের সঙ্গে সব সময়ই সম্প্রীতি ও সদ্ভাব বজায় রেখে চলে। বেশির ভাগ সময় একা ও নিভৃতচারী হলেও যখন এরা অন্যদের সঙ্গে মেশে তখন তা হয় খুব নিবিড়। এরকম ক্ষেত্রে প্যাঁচারা সব সারিবদ্ধভাবে বসে। আর তখন আনন্দে ওদের চক্ষু মুদিত থাকে। যেন ধ্যানস্থ ঋষি। এই সার বেঁধে চোখ বন্ধ করে বসার ফরমেশনটাকে ‘পেঁচকদের পার্লামেন্ট’ বা ইংরেজিতে ‘‘পার্লামেন্ট অব দ্য আউলস’’ বলে অভিহিত করা হয় অমিত বললেন, ‘‘এই পাঁচটি পেঁচকছানা কানহা জাতীয় উদ্যানের ঢোকার মুখটার কাছে প্রতিদিন নিয়ম করে বসে থাকে। ’’
ছবি তোলার দিন অমিতের গাইড ওদের অবস্থানের কথা তাকে ‘'Sir, you are lucky the owls are here.'’ জানানো মাত্র অমিত আর দেরি করেননি। ফটোগ্রাফার হিসেবে তিনি আর এক মুহূর্ত দেরি না করে ছবি তুলতে নেমে পড়েন।
অমিত ভাগ্যবান। ওইখানটায় ওটাই ছিলো পেঁচাগুলোর শেষ দিন। এরপর এদের আর কখনো ওখানটায় দেখা যায় নি। অরণ্যের কোনো নতুন আস্তানায় পাড়ি জমিয়েছে এরা।
নিজের সৌভাগ্যকে এভাবেই বর্ণনা করলেন অমিত: "এই মায়াবী পেঁচা-পরিবারটির ছবি তোলার সুযোগ পাওয়া আমার জন্য বড় আনন্দের। ওদের দেখতে পাওয়াটা সব সময়ই আমার জন্য এক তৃপ্তিকর অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে। ’’
বাংলাদেশ সময়: ০০১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০১৬
জেএম/এএ