ডব্লিউও নামক একটি ভাইরাস কালো বিধবা মাকড়সার বিষের জিন চুরি করে বলে প্রমাণ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা, জেনেটিক চুরির ক্ষেত্রে যা একটি খুব অস্বাভাবিক ঘটনা। ডিএনএ পরীক্ষায় ওই ভাইরাসের জিনের সঙ্গে ধরা পড়েছে বিষের জিনটি।
সম্ভবত ভাইরাসটি প্রাণীকোষে ঢোকার জন্য সহায়ক হিসেবে বিষ চুরি করে নেয়।
কিন্তু তার লক্ষ্য শুধুমাত্র পশুই নয়, ডব্লিউও ভাইরাস পোকামাকড় এবং মাকড়সার শরীরে বসবাসকারী ব্যাকটেরিয়াকেও সংক্রমিত করতে পারে।
এটি একটি বিস্ময়কর ঘটনা। কারণ, ব্যাকটেরিয়া ভাইরাস সাধারণত শুধুমাত্র ব্যাকটেরিয়া থেকেই ডিএনএ চুরির চিন্তা করে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সারাহ ও শেঠ বর্ডেনস্টেইন প্রাকৃতিক যোগাযোগ জার্নালে ডব্লিউও জিনোম সম্পর্কে বিশ্লেষণমূলক লেখা লিখেছেন। তারা দেখিয়েছেন, এটি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত ভাইরাস, যা ব্যাক্টেরিওফাজ নামে পরিচিত একটি শ্রেণীভুক্ত।
ডব্লিউও ভাইরাস ওয়ালবেকিয়া নামের এক ধরনের ব্যাকটেরিয়াকে টার্গেট করে, যা পোকামাকড় ও মাকড়সার কোষকে সংক্রমিত করে ফেলে।
ভাইরাস জিন ল্যাট্রোটক্সিন নামক কালো বিধবা মাকড়সার ব্যবহৃত বিষ চুরি করে নেয়। এ বিষ ইউক্যারিয়োটসের (প্রাণী, উদ্ভিদ এবং ছত্রাকসহ জীবনের ডোমেইন) এর কোষের পর্দা ভেঙে দিতে পারে।
গবেষকদের ধারণা, ভাইরাস এ ল্যাট্রোটক্সিন ব্যবহার করে তাদের টার্গেট করা প্রাণীকোষের ব্যাকটেরিয়ায় প্রবেশ, অবস্থান ও প্রয়োজন অনুসারে বের হয়ে যাওয়ার জন্য।
এ গবেষণার ফলাফল অস্বাভাবিক। কারণ, ভাইরাস সাধারণত ইউক্যারিয়োটসকে সংক্রমিত করে এবং ভাইরাস সংক্রমিত ব্যাকটেরিয়া সাধারণত দরকারি ব্যাকটেরিয়ার জিন চুরি করে থাকে।
কিন্তু গবেষণার ভিত্তিতে লেখকরা জানিয়েছেন, এর ফলাফল তাদেরকে বিষয়টিকে বোধগম্য করে তোলে। কারণ, ডব্লিউও ভাইরাসের দু’টি পৃথক ডোমেইন তাদের জীবনের রক্ষা কৌশল নিয়ে প্রতিযোগিতা করে।
ডব্লিউও ভাইরাস তার জীবনচক্রে পোকা ও মাকড়সা কোষের অভ্যন্তরীণ পরিবেশে উন্মুক্ত হয়। এবং বিজ্ঞানীরা দেখেছেন যে, তার ডিএনএ’র অন্যান্য জিন প্রাণীদের ইমিউন সিস্টেমকে এড়িয়ে চলে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৬
ইএস/এএসআর