ঢাকা: গল্পে আছে, স্লথ কখনও সময়মতো স্কুলে পৌঁছাতে পারতো না। পৌঁছাবেই বা কি করে! যার নামটিই হয়ে গেছে ধীরগতির সমার্থক, সে কীভাবে সময় মেনে কাজ করবে!
বিশ্বের সবচেয়ে ধীরগতির প্রাণীর খেতাবও তো স্লথেরই!
স্লথ মূলত গেছো প্রাণী।
এ বিবেচনায় তাকে বিশ্বের সবচেয়ে অলস প্রাণীর খেতাবও বোধহয় দেওয়া যায়!
২০ ঘণ্টা ঘুমের পর জাগলেও নড়তে চায় না জায়গা ছেড়ে। তারা এতোটাই কুঁড়ে যে, এক জায়গায় বসে থাকতে থাকতে তাদের পশমে স্যাঁতলা জমে যায়।
স্লথ মূলত কেন্দ্রীয় ও দক্ষিণ আমেরিকার ক্রান্তীয় বনাঞ্চলের প্রাণী। লম্বা বাহু ও লোমের কারণে তাদের দেখতে অনেকটা বানরের মতো। তবে এরা আরমাডিলো ও অ্যান্টইটার প্রজাতির প্রাণী। এরা দুই থেকে আড়াই ফুট লম্বা হতে পারে। ওজন হয় সাধারণত সাড়ে তিন থেকে প্রায় আট কেজি।
স্লথের দুটি প্রধান প্রজাতি আছে। দু’টির মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে- একটির মাথা অন্যটির চেয়ে বেশি গোলাকার, দুঃখ ভারাক্রান্ত ছোট চোখ ও লেজ। দুই প্রজাতির মধ্যে একটির তিনটি বাঁকা হাত-পা আছে, অন্যটির দু’টি।
কিছু বিজ্ঞানী মনে করেন, স্লথ তাদের চলাফেরায় এ ধীরগতি এনেছে শিকারি পাখি ঈগল কিংবা বিড়ালের চোখ এড়ানোর জন্য। কারণ, এরা চলমান প্রাণীর দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রেখে শিকার ধরতে পছন্দ করে। এদের গায়ের লোমে জন্মানো স্যাঁতলা গাছের পাতার সঙ্গে মিশে থাকতে সাহায্য করে। শিকারির হাত থেকেও এটা তাদের বাঁচায়।
সচরাচর এরা গাছ থেকে নিচে নামে না। হয়তো সপ্তাহে একবার গোসল অথবা কোনো প্রাকৃতিক কর্ম সারতে তাদের নিচে নামতে দেখা যায়।
স্লথের নখগুলো বড় বড়। এরা গাছেই বাচ্চা দেয়। একবারে একটি বাচ্চার জন্ম দিতে পারে। মায়ের পেটের সঙ্গে ঝুলে ঝুলে বাচ্চাগুলো প্রায় বছরখানেক মায়ের কাছেই থাকে।
স্লথ মূলত পাতা খেয়েই বাঁচে। মুখের উপরে ১০টি এবং নিচের পাটিতে ৮টি দাঁত থাকে এদের। মজার বিষয়, চলার ধীরগতির মতো এদের চারস্তর বিশিষ্ট পাকস্থলী খাবার হজমেও দেরি করে।
এমনই এক অদ্ভুত প্রাণী স্লথ।
বাংলাদেশ সময়: ০০৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৬
এএ/এএসআর