ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অফবিট

হাঁসের প্লেন ভ্রমণে যাত্রীদের মনে প্রশান্তি!

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০১৬
হাঁসের প্লেন ভ্রমণে যাত্রীদের মনে প্রশান্তি!

ড্যানিয়েল নামে একটি হাঁসকে সহযাত্রী হিসেবে পেয়ে সম্প্রতি আমোদিত হয়েছেন প্লেনের যাত্রীরা। হাঁসটি তার মনিবের সঙ্গে আকাশপথে ভ্রমণ করছিল।

ড্যানিয়েলকে নিজের মানসিক সাপোর্ট প্রদানকারী প্রাণী বলেও মনে করেন হাঁসটির মনিব। শুধু তাই নয়, প্লেনে হাঁসের উপস্থিতি অন্য যাত্রীদেরও মানসিক প্রশান্তি এনে দিয়েছে।     

আমেরিকান এয়ারলাইন্সের অভ্যন্তরীণ ছোট ফ্লাইটটি নর্থ ক্যারোলিনার কার্লট থেকে অ্যাশভিল শহরে যাচ্ছিল। এর যাত্রী মার্ক এসিজ বিমানবন্দরেই খেয়াল করেন তাদের প্লেনে এক অস্বাভাবিক যাত্রী রয়েছে। যাত্রীটি আর কেউ নয়, একটি হাঁস। করিডোরে নিজস্ব ভঙ্গিমায় দাঁড়িয়ে ছিল হাঁসটি।

লাল জুতা আর ক্যাপ্টেন আমেরিকা ডায়াপার পরা হাঁসটিকে তার নারী মনিব উইসকনসিন কার্লা ফিৎজগেরাল্ড নিজের সহকর্মী বলে দাবি করেন। তিনি ব্যাখ্যা দেন, ড্যানিয়েল টারডাকেন স্টিংকারবাট; ডাকনাম ড্যানিয়েল- সাড়ে চার বছর বয়সী একটি ভারতীয় রানার হাঁস।

‘আমি হয়তো কয়েকজনের সামান্য সমালোচনামূলক মন্তব্য শুনেছি। কিন্তু সবাই প্লেনে একটি হাঁস থাকায় আনন্দিত ছিলেন’- বলেন যাত্রী মার্ক এসিজ।  

ড্যানিয়েল ও তার মনিব অন্য অনেক যাত্রীর মতো যখন বোর্ডিং পাস করছিল, এসিজ তখন হাঁসটির কয়েকটি ছবি তুলে নেন। প্লেনটি উড্ডয়নের পর তিনি একটু পড়ায় মনোযোগ দিতে চেষ্টা করেন। কিন্তু বার বার তার ডানদিকের একসারি সামনে থাকা হাঁসটির দিকে চোখ চলে যায়।  

হাঁসটি যখন প্লেনের জানালায় তাকিয়ে বাইরের পৃথিবী দেখছিল, এসিজ তখন আরও একটি ছবি তুলে নেন। ভ্রমণ শেষে এসিজ টুইটারে ড্যানিয়েলের ছবি পোস্ট করলে তা ভাইরাল হয়ে যায়।

‘কার্লট থেকে অ্যাশভিলে যাত্রায় আমার সঙ্গী এই সুদর্শন হাঁস ড্যানিয়েল’- মিসিসিপি সাউদার্নে যাওয়ার পর এসিজ প্রথম টুইট করেন এভাবে। পরে তিনি আরো দু’টি ছবি ও একটি ভিডিও পোস্ট করেন। সবগুলো টুইটই হাজার হাজার বার শেয়ার হয়েছে।

‘আমি আশা করেছিলাম যে, এটি আমার এক দম্পতি বন্ধুদের হাসাতে পারে। তবে ধারণা ছিল না ড্যানিয়েলের ছবি ভাইরাল হয়ে যাবে। জুতা এবং ডায়াপার পরা একটি হাঁসের প্লেন ভ্রমণ ইন্টারনেটে সাড়া জাগানোই স্বাভাবিক’- বলেন এসিজ।

হাঁসটির মালিকের বরাত দিয়ে এসিজ জানান, ড্যানিয়েল টকটকে লাল জুতোয় খুব খুশি, তার লেজটিও ছিল গৌরবের। হাঁসের মাথা এবং প্লেনের জানালার আকৃতি মানুষের খুব চেনা। আর এ দু’টি খুব চেনা আকৃতি একসঙ্গে এক ছবিতে পেয়েছেন, যা সাধারণত একসঙ্গে যেতে পারে না। এটা মানুষের চোখে ধরা পড়েছে। ’

অন্য যাত্রীদের সঙ্গে এসিজও ভ্রমণকালে আমোদিত হন। মানসিক সাপোর্ট দেওয়া প্রাণী হিসাবে এর মালিকের মতোই তাদের কাছেও ধরা দেয় ড্যানিয়েল। ভ্রমণ শেষে দেখা গেল, হাঁসটি সোজা হয়ে বসলো এবং যাত্রীরা আবিষ্কার করেন, ভারতীয় রানার হাঁস ওড়ে না।

ড্যানিয়েলের মালিক উইসকনসিন কার্লা ফিৎজগেরাল্ড তার পোষা প্রাণীটির প্রতি ইন্টারনেট জগতের অতিরিক্ত আগ্রহে বিস্মিত। তিনি বলেন, ‘আমি জানতাম না ছয় পাউন্ডের একটি ভারতীয় রানার হাঁস এতো তোলপাড় সৃষ্টি করতে পারে। তবে সে আমাকে মানসিক স‍াপোর্ট দেওয়া হাঁস, এটা স্বাভাবিক!’ 

ফিৎজগেরাল্ড ২০১২ সালে দুই দিন বয়সী ড্যানিয়েলকে যখন নিয়ে আসেন, তখন তিনি একটি দুর্ঘটনায় আহত অবস্থায় ছিলেন। এ দুর্ঘটনার পর থেকে ড্যানিয়েল সর্বত্র তার সঙ্গী হয়েছে, মানসিকভাবে আনন্দে রেখেছে।

ফিৎজগেরাল্ডের সঙ্গে ড্যানিয়েলের আগের বেশিরভাগ ভ্রমণ ছিল গাড়িতে। এই প্রথম সে একটি প্লেনে ভ্রমণ করলো। প্রথম ভ্রমণের সনদপত্রও পেয়েছে সে।  

‘আমি যখনই ব্যথা পেয়েছি বলে ড্যানিয়েলের মনে হয়, সে চেষ্টা করেছে নানাভাবে আমার ব্যথা দূর করতে’ উল্লেখ করেন ফিৎজগেরাল্ড। তিনি মনে করেন, ড্যানিয়েলের এ ইতিবাচকতা অনন্য, যা তাকে মানসিক শক্তি যুগিয়েছে। তার প্রতি মানুষের ইতিবাচক সাড়ারও এটিই কারণ।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০১৬
এএসআর/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।