স্কটল্যান্ডের উত্তর-পশ্চিম সমুদ্রের ১ হাজার মিটার গভীরে রয়েছে স্বাস্থ্যকর জল প্রবাল, যা ১০ হাজার বছরে ধরে টিকে আছে। এ সমুদ্রতল মলিন কর্দমাক্ত হলেও সেখানে রয়েছে শক্তিশালী প্রবাল প্রাচীরে ঘেরা সমৃদ্ধশালী প্রবালদ্বীপ।
এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত যুক্তরাজ্যের সর্ববৃহৎ ও একমাত্র ঠাণ্ডা জল প্রবাল লোফেলিয়া পারতুসার আশ্রয়স্থল ডারউইন ঢিবি নামক প্রবালদ্বীপটি, যা ১০০ বর্গ কিমি জুড়ে বিস্তৃত। তবে যুক্তরাজ্যের জলরাশিতে অনাবিষ্কৃত আরও অনেক প্রবালদ্বীপে ঠাণ্ডা জল প্রবাল পাওয়া যেতে পারে বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা।
ডারউইন ঢিবি সৃষ্টি হয়েছে প্রায় ১০ হাজার বছর আগে বরফ যুগের শেষ থেকে। এর ভঙ্গুর ঠাণ্ডা জল প্রবালগুলোকে মুহূর্তের মধ্যে হত্যা করা সম্ভব হলেও তাদের গভীরতার জন্য হাজার হাজার বছর ধরে ধরা পড়েনি।
গত এক দশক ধরে জেলেদের মাছ ধরা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সুস্থই আছে প্রবালগুলো। ফলে সমুদ্রের ১০ হাজার বছরের বিবর্তনের ধারা এদের নিয়ে গবেষণা করেই জানা সম্ভব।
আবার গভীর জলের এই প্রবাল অত্যন্ত ধীর বর্ধনশীল হওয়ায় শত শত বছর ধরে আশেপাশের কোনো প্রভাব থেকে মুক্ত হয়ে মোটামুটি একই ধরনের আছে। এ কারণে তারা সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র সম্পর্কেও ধারণা দিতে সক্ষম।
যুক্তরাজ্যের গভীর সমুদ্রে জল প্রবালের অস্তিত্ব সম্পর্কে অন্তত সপ্তদশ শতাব্দী থেকেই জানতেন জেলেরা। আর কয়েক দশক আগে যুক্তরাজ্যের পার্শ্ববর্তী কয়েকটি সমুদ্রপথ সম্পর্কে জানতে পারেন বিজ্ঞানীরা। ১৯৯৮ সালে জাতীয় সমুদ্রবিজ্ঞান সেন্টারের (এনওসি) ব্রায়ান ব্রেটের নেতৃত্বে বড় মাপের জরিপে স্কটল্যান্ডের ডারউইন ঢিবি’র বিষয়ে জানা যায়।
ব্রায়ান ব্রেট জানান, ডারউইন ঢিবি ঠাণ্ডা জল প্রবালের ছোট উপনিবেশ। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় সমুদ্রতল থেকে এটি আলাদা। এই কোরালের বেঁচে থাকার জন্য সূর্যালোকের প্রয়োজন হয় না। তারা অন্ধকারে বসে খাবারের জন্য অপেক্ষা করে। পাশ দিয়ে যাওয়া খাদ্যগ্রহণ করে বেঁচে থাকে।
সেখানকার ১৩০০ জীববৈচিত্র্যের মধ্যে আছে কালো প্রবালও।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০১৬
এএসআর/এটি