অস্ট্রেলিয়ার বিলুপ্ত প্যালোরচেস্টেসদের প্রাথমিকভাবে দৈত্য ক্যাঙ্গারু প্রজাতি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। শাবকবাহী (পেটের তলায় থলিতে শাবক বহন করে এমন স্তন্যপায়ী) প্রাণীদের বেশ কয়েকটি প্রজাতির রূপান্তরও মনে হচ্ছিল এটিকে।
কিন্তু ১৮৭৩ সালে এর প্রত্ন জীবাশ্ম আবিস্কারের পর থেকে প্রাণীটি নিজেই একটি মহাপ্রজাতি হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। এর কঙ্কালের আরো কয়েকটি টুকরা নিয়ে গবেষণা শেষে নতুন তত্ত্ব প্রমাণ করেছে, বিবর্তনের ধারায় এরা নিজেকে রূপান্তর করেনি। বরং, তাকে যেসব প্রাণীদের মতো লাগছিল, সেসব প্রাণীদের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে প্যালোরচেস্টেসদের কিছু অঙ্গ বাইরে রাখা হয়েছে। এ যেন এক প্রাকৃতিক অস্ত্রোপচার।
কিন্তু তারাও পরিষ্কারভাবে ডিপরোটোডনের (গণ্ডার-ভালুকের মতো দেখতে বিলুপ্ত হাতি) নিকট আত্মীয়। কেননা, প্যালোরচেস্টেসদের সঙ্গে ডিপরোটোডনের শারীরিক মিল ছাড়াও রয়েছে একই ধরনের শক্তিশালী থাবা।
প্রাগৈতিহাসিক এই আদিবাসী প্রাণীদের শিলাবদ্ধ জীবাশ্ম নিয়ে গবেষণা শেষে এদের পেইন্টিং করা হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ডিপরোটোডনের কাজিন শাবকবাহী সিংহের মতোই ত্তঁৎ পাতা শিকারি ছিল প্যালোরচেস্টেস। আধুনিক বাঘের মতো তাদের ডোরাকাটা চিহ্নও ছিল।
শিলা শিল্প ডেটিং এই চিত্রাঙ্কন আরও বলছে, যে সময়টাতে প্যালোরচেস্টেস জীবিত ছিল, সে সময়টাতেই ধীরে ধীরে বৈজ্ঞানিক পুনর্গঠন ঘটেছে তার। আদিবাসী প্রাণীদেরকে যেন ওজন ধার দিয়েছে সে। আবার স্তন্যপায়ী বৃহদাকার শাবকবাহী ট্রাপিরদের দলেও ফেলা যায় একে। স্লথদের মতো গমগমে আওয়াজও করতো।
এর নিচের পাটির দাঁত ছিল গভীর নিখুঁত নোঙ্গরের মতো। দীর্ঘদেহী জিরাফের মতো জিহ্বা ছাড়াও ছিল খুঁপড়িকাটা অনুনাসিক গহ্বর ও একটি ছোট ট্রাঙ্কের উপস্থিতি।
আর এসব প্রাণীদের অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম বসতি স্থাপনের কিছু তাৎপর্যও বহন করেছিল আড়াই মিটার পর্যন্ত উচ্চতার প্যালোরচেস্টেস।
বাংলাদেশ সময়: ০৩১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৬
এএসআর