২০১০ সালের এপ্রিলে জার্মানির কলোগনি চিড়িয়াখানায় টিলডা নামক একটি ওরাংওটাং ভিডিওচিত্র প্রকাশিত হয়। টিলডা সেখানে মানুষের মতোই শিস ও হাততালি দিচ্ছিল।
আফ্রিকান ধূসর তোতা পাখি অ্যালেক্স মানুষের মতো বক্তৃতা ও ভাঁড়ামি করে বিখ্যাত হয়েছিল। অ্যালেক্স দ্রুত শিখতে ও নতুন ইংরেজি শব্দ অনুকরণ করতে পারতো। এমনকি ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’ বা ‘শুভ রাত্রি’ বলেও বিদায় নিতো। ২০০৭ সালে ৩১ বছর বয়সে অ্যালেক্স মারা গেলে তার সারা পৃথিবীর ভক্তরা শোক প্রকাশ করেন।
টিলডা ও অ্যালেক্সের মতোই বনমানুষ, শিম্পাঞ্জি, বেলুগা তিমি, ডলফিন, হাতি, জেব্রা ফিঞ্চ ও তোতাসহ কিছু গায়ক পাখি মানুষের বাকশব্দ অনুকরণ করতে পারে।
কিন্তু তারা কি বুঝতে পারে যে, তারা কি বলছে? কিভাবেই বা এটা করতে পারে তারা?
গবেষকরা বলছেন, তাদের কণ্ঠনালী, জিহ্বা, মস্তিষ্ক ও জিন এ ক্ষমতার প্রভাবক।
প্রাণী চেতনা বিশেষজ্ঞ আইরিন ম্যাক্সিন পিপারবার্গ বলেন, ‘তাদের জটিল কন্ঠনালী, পুরু পেশিতন্তু ও নমনীয় জিহ্বা সহজেই শব্দ উৎপাদনে সাহায্য করে, যা মানুষের বক্তৃতার মতো শোনায়’।
উত্তর ক্যারোলিনার ডরহম ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের এরিক জারভিস বলেন, ‘বাচিক ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে বিশেষ মস্তিষ্ক সার্কিট ও কেন্দ্রীয় অঞ্চলে এজন্য পেশি নিয়ন্ত্রণ হয়। অল্প কিছু প্রাণীরই এটি আছে, যারা মানুষের মতো শব্দ উৎপাদন করতে পারে। এই মস্তিষ্ক সার্কিট তাদের নতুন শব্দ শিখতে সাহায্য করে’।
‘তোতা ও হামিংবার্ডসহ বিভিন্ন গায়ক পাখিদের মানুষের অনুরূপ ৫০টিরও বেশি জিনের একটি সেট আছে, যা তাদেরকে মানুষের শব্দ অনুকরণে সহায়তা করে’।
তবে এইসব প্রাণীদের প্রশিক্ষকরা বলছেন, ‘তারা মানুষের যেসব কথা শিখছে, সেগুলোরই পুনরাবৃত্তি করছে। তারা এসব কথার অর্থ জানে না এবং না বুঝেই সহজভাবে শিখছে ও বলছে। তারা অনুকরণ করতে পারবে, কিন্তু নতুন কিছু করা বা বুঝিয়ে বলার ক্ষমতা তাদের নেই’।
বাংলাদেশ সময়: ০০৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৬
এএসআর