ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অফবিট

যেকোনো প্রয়োজনে ২০ মাইল খোলা সমুদ্র পাড়ি!

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৬
যেকোনো প্রয়োজনে ২০ মাইল খোলা সমুদ্র পাড়ি!

দাঁতের চিকিৎসকের কাছে, দোকানে বা পাবে যেতে ফাওলা গ্রামের বাসিন্দাদের খোলা সমুদ্রের ২০ মাইল পাড়ি দিতে হবে। কারণ, গ্রামটি তার মূল ভূখণ্ড থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন...

দাঁতের চিকিৎসকের কাছে, দোকানে বা পাবে যেতে ফাওলা গ্রামের বাসিন্দাদের খোলা সমুদ্রের ২০ মাইল পাড়ি দিতে হবে। কারণ, গ্রামটি তার মূল ভূখণ্ড থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন ও প্রত্যন্ত।

আর নিত্য প্রয়োজনে মূল এলাকায় যেতে বিকল্প এ সংযোগ ব্যবস্থা গ্রামটির মানুষ নিজস্ব উদ্যোগেই তৈরি করে নিয়েছেন।

তবে সমুদ্রের পানি ভাগ করে নয়, পাড় দিয়ে যাওয়া-আসার ওই রাস্তাটি গড়া হয়েছে, অনেকটা ফসলের ক্ষেতের আইল রাস্তার মতো।

মজার বিষয় হচ্ছে যে, ফাওলার লোকসংখ্যা মাত্র ৩০ জন।

ফাওলা গ্রামটি স্কটল্যান্ডের সেটল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের নর্স দ্বীপের অন্তর্গত, যা ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের জনঅধ্যুষিত সব দ্বীপের মধ্যে সবচেয়ে বিচ্ছিন্ন। মাত্র ৫ বর্গকিলোমিটারের গ্রামটির পরবর্তী তটরেখা অবস্থিত নর্স দ্বীপের মূল ভূখণ্ডে, যা ফাওলার ২০ মাইল পশ্চিমে। আটলান্টিক মহাসাগর বেষ্টিত ফাওলা গ্রামবাসী সেখানে যাওয়া-আসা করতে ওই ২০ মাইলজুড়ে পথ তৈরি করেছেন, যেটি নর্স দ্বীপ ছাড়াও সেটল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের অন্যান্য অংশকে কার্যত সংযুক্ত করেছে। অবশ্য সমুদ্রপথে নৌকা বা অন্য জলযানেও যাতায়াত করেন বাসিন্দারা।

৩০ বছর ধরে ফাওলার বাসিন্দা স্টুয়ার্ট টেলর জানান, ১৯৩০ সাল থেকেই মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে এ গ্রামটিকে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা শুরু হয়। এখনকার গমন পথটি ১৯৭০ সালের অধিবাসীরা চূড়ান্তভাবে নির্মাণ সম্পন্ন করেন। ৮০ বছরের তুলনায় এটিই তাদের অনেক বেশি সংযুক্ত করেছে।

তবে তারা বিচ্ছিন্ন বলে মনে করেন না স্টুয়ার্ট টেলর। তিনি বলেন, সেটল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের প্রধান দ্বীপ মেনল্যান্ড থেকে ফাওলায় সপ্তাহে চারদিন উড়োজাহাজ চলে। আমাদের আছে মোবাইল ও ইন্টারনেট সংযোগ এবং বিদ্যুৎ ও টিভি, বিমানবন্দরে একটি পাবলিক ফোন ও সব বাসিন্দাদের নিজস্ব জমিতে ফোনের লাইন।     

পাঁচ হাজার বছর ধরে জনঅধ্যুষিত ফাওলার মানুষের বসবাস ও জীবনযাত্রা কঠোর। তবে এর বন্য দৃশ্যাবলী অসাধারণ সৌন্দর্যময় এবং বিচ্ছিন্ন অবস্থান সত্ত্বেও অমায়িক ও অতিথিপরায়ন স্থানীয় বাসিন্দারা। পঞ্চদশ শতকে স্কটল্যান্ডে অন্তর্ভুক্ত হলেও নর্স দ্বীপের প্রাচীন নর্ন ভাষায় কথা বলেন বাসিন্দারা। নবম শতকে নর্স দ্বীপবাসীরা জয় করেন ফাওলাকে আর সেই থেকে ভাষাটি এখানে চালু রয়েছে।

দ্বীপটি এখন হলবার্ন পরিবারের মালিকানাধীন। আর ফাওলার বর্তমান অধিবাসীদের মধ্যে একজন মাত্র স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীও ওই পরিবারের সন্তান। তাকেও স্কুলে যেতে হয় নর্সের মূল ভূখণ্ডে।

বাংলাদেশ সময়: ০২২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৬
এএসআর/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।