ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অফবিট

বানর যখন ধাত্রী

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৬
বানর যখন ধাত্রী

একটি সোনালী রঙের নাকবোঁচা বানরকে দিনের বেলায় অন্যের সাহায্যে বাচ্চা জন্ম দিতে দেখা গেছে। প্রথমবারের মতো বানর প্রজাতির মধ্যে এ আচরণ দেখে আগের ধারণা বদলাতে বাধ্য হয়েছেন প্রাণীবিজ্ঞানীরা।

একটি সোনালী রঙের নাকবোঁচা বানরকে দিনের বেলায় অন্যের সাহায্যে বাচ্চা জন্ম দিতে দেখা গেছে। প্রথমবারের মতো বানর প্রজাতির মধ্যে এ আচরণ দেখে আগের ধারণা বদলাতে বাধ্য হয়েছেন প্রাণীবিজ্ঞানীরা।

আগে মনে করা হতো, বানরেরা রাতের বেলায়ই কেবল সন্তান জন্ম দেয়। তারা একা একাই সন্তানকে পৃথিবীতে আনে, প্রসবকালে মা বানর কারো সহায়তা পায় না। রাতের অন্ধকারে বাচ্চা প্রসব তাদেরকে শিকারিদের হাত থেকে ভালো সুরক্ষা দেয়।
 
কয়েক দশক ধরে পর্যবেক্ষণের পর সোনালী রঙের ওই নাকবোঁচা বানরটিকে দিনের বেলায় প্রসব করতে দেখেন গবেষকরা। গর্ভবতী বানরটিকে অন্য একটি নারী-বানর সহজ প্রসবে সহায়তা করে।

গবেষকরা জানান, পাঁচ মিনিটের মতো সময় লাগে প্রসব প্রক্রিয়ায়। আরো দেড় ঘণ্টা পর্যন্ত প্রসব-পরবর্তী প্রসূতিসেবা কার্যক্রম দেখা গেছে তাদের মধ্যে।
 
২০১৩ সালেও একদল বিজ্ঞানী বানরধাত্রীর দেখা পেয়েছিলেন। তবে সেটি সেটি দেখা গিয়েছিল হনুমান প্রজাতির মধ্যে। অর্থাৎ, মানুষের নজরে না এলেও কোনো কোনো বানর প্রজাতির মধ্যে ধাত্রী আছে।


 
কখনো কখনো পুরুষ বানরকেও গর্ভবতীকে প্রসবে সহায়তা করতে দেখা গেছে। তবে তারা মা-বানর ও বাচ্চাকে স্পর্শ করে না।
 
পাশাপাশি এটাও বোঝা গেছে যে, প্রাণীদের মধ্যে মানুষের সবচেয়ে কাছের প্রজাতি বানরের প্রসব প্রক্রিয়াও আমাদের মতোই।

এবারের ঘটনাটি ছিল এ রকম:
মা-বানরের প্রসব বেদনা শুরু হলে ধাত্রী-বানর এগিয়ে এসে তাকে ব্যথা সহ্য করতে সহায়তা করে। প্রসবের সময় ঘনিয়ে এলে ধাত্রী-বানর মা-বানরের খুব কাছে এসে দাঁড়ায়। ধাত্রী-বানর জন্মনালী থেকে শিশু বানরটিকে বের করতে দু’বার চেষ্টা করে।
 
মাথা দৃশ্যমান হলে ধাত্রী-বানর মাথা ধরে বানরের বাচ্চাটিকে বের করে আনার চেষ্টা চালাতে থাকে। শিশুর মাথা যখন পুরোপুরি বের হয়ে আসে, তখনও ধাত্রী-বানর মা বানরকে বাচ্চা প্রসবে সহায়তা করে।


 
বাচ্চা পুরো বের হয়ে এলেও ধাত্রী-বানরটি মায়ের কাছেই থেকে বাচ্চাকে প্রথম দুধ খাওয়াতে সহায়তা করে। বাচ্চা জন্মের ৭৭ মিনিট পর মা-বানর ধাত্রী ও অন্য একটি মেয়ে বানরকে বাচ্চা ধরতে দেয়। পরে আরেকটি তরুণী বানরও বাচ্চা ধরতে এলে তাকে আর অনুমতি দেয়নি মা বানর।
 
গবেষক দলের সদস্য চীনা প্রাণীবিজ্ঞানী বাউ-গুও লি বলেন, ‘প্রসবকালে সামাজিক সহায়তা মানুষের বৈশিষ্ট্য। বন্য বানর প্রজাতির মধ্যে এমন সরাসরি সহায়তার ঘটনা আগে দেখা যায়নি’।
 
‘এসব বিবর্তনশীল প্রাণীদের আচরণ পর্যবেক্ষণ মানব সমাজের বিবর্তন অনুসন্ধানে সহায়ক হবে’- বলেন লি।
 
বাংলাদেশ সময়: ০০৫৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৬
ইএস/এএসআর/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।