সুপ্রশস্ত জলধারা, ঝরনা, শ্যামল বনভূমি, উঁচু উঁচু পাহাড়, নীলাকাশে মেঘের খেলা, ঝিরিঝিরি বাতাস সমৃদ্ধ পাতাগোনিয়া ন্যাশনাল পার্ক। সবুজ ঘাসে ঢাকা দিগন্তছোঁয়া খোলা মাঠ আর বরফে ঢাকা পাহাড়চূড়ায় লালপদ্ম ফুটে থাকে সেখানে।
গোটা পাতাগোনিয়া পাহাড় দিয়ে ঘেরা বলে পাহাড় বেয়ে, পাহাড় পাড়ি দিয়ে সেখানে যেতে হয়। পূর্ব দিকে আস্ত এক ধূ-ধূ মরুভূমি। হাজার প্রজাতির পশু-পাখিসহ নানান জীববৈচিত্র্যে ঘেরা এ জাতীয় উদ্যানটি।
সব মিলিয়ে স্বর্গের মতো নিশ্বাস থামিয়ে দেওয়া সৌন্দর্য, অবিশ্বাস্য রোমাঞ্চ আর কৌতুহলে আবৃত গোটা পাতাগোনিয়া।
চিলির প্রত্যন্ত পার্বত্য আইসেন অঞ্চলের ৬ লাখ ৫০ হাজার একরের পাতাগোনিয়া এখন পৃথিবীবিখ্যাত পর্যটনকেন্দ্র। অথচ মাত্র এক দশক আগেও পার্বত্য এলাকা বলে পর্যটকদের কাছে মোটামুটি অপরিচিতই ছিল। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ার পর থেকেই লাখ লাখ পর্যটক ছুটে যাচ্ছেন সেখানে।
চিলির জাতীয় ভাণ্ডার জেইনিমেনি, তামাঙ্গো, এস্তানেশিয়া ও চাকাবুকো উপত্যকা- এ চারটি প্রধান প্রকল্প-এলাকার সমন্বয়ে গঠিত পাতাগোনিয়ায় চলছে প্রকৃতি সংরক্ষণের এক সুবিশাল কর্মযজ্ঞও। জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধারে চাকাবুকো উপত্যকার বেকার নদীর মোহনায় গড়া হয়েছে ১ লাখ ৭৮ হাজার একরের ভেড়ার খামার। বিপন্ন ফ্লেমিংগো, পাতাগোনিয়ান উট, পিউমা ও হিউমুল হরিণ রক্ষায় অভয়ারণ্যও গড়ে তোলা হয়েছে।
এ পার্কের কর্মকর্তা মর্গাদো জানান, এখানকার বড় উদ্যানে আছে উচ্চতর সম্ভাবনা; অথচ হুমকির মুখে থাকা প্রজাতির প্রাণীরা সেখানে বাস করে। তাদের রক্ষা ও পুনরুদ্ধার করা হবে।
‘পাতাগোনিয়ান প্রান্তরের একটি প্রকাণ্ড উপত্যকা, আন্দেজের বন, বরফাবৃত পর্বতমালা এবং তুষারক্ষেত্র পরিবৃত পোত, বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণীর উচ্চ ঘনত্ব আপনাকে মুগ্ধ করবেই। পাতাগোনিয়ায় এমন সব বনভূমি রয়েছে, যেখানে আজ পর্যন্ত কোনো মানুষের পা পড়েনি। এমন জলধারা রয়েছে যেখানকার জল হয়তো আপনিই প্রথম ছুঁয়ে দেখলেন’- বলেন মর্গাদো।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৬
এএসআর/জেএম