ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

বিষাক্ত আর্কটিক প্রাণীর মাংসে ঝুঁকিতে আলাস্কাবাসী

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৬
বিষাক্ত আর্কটিক প্রাণীর মাংসে ঝুঁকিতে আলাস্কাবাসী

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় বরফ গলার পাশাপাশি পরিবেশ দূষণেও হারিয়ে যেতে বসেছে এর জীববৈচিত্র্য। পাশাপাশি আরও একটি মারাত্মক আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা যে, সেখানকার অল্প সংখ্যক বাসিন্দারাও স্বাস্থ্যঝুঁকির হুমকিতে রয়েছেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় বরফ গলার পাশাপাশি পরিবেশ দূষণেও হারিয়ে যেতে বসেছে এর জীববৈচিত্র্য। পাশাপাশি আরও একটি মারাত্মক আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা যে, সেখানকার অল্প সংখ্যক বাসিন্দারাও স্বাস্থ্যঝুঁকির হুমকিতে রয়েছেন।

দূষিত পরিবেশের নানা উপকরণে অসুস্থ হচ্ছে আর্কটিক প্রাণীরা আর সেসবের মাংস খেয়ে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে আলাস্কানদের- এমনটিই জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।  

উত্তর মেরুর দক্ষিণের শহর আলাস্কার ব্যারোতে সাড়ে ৪ হাজার মানুষের বসবাস। মহাসাগর ও তুন্দ্রা অঞ্চল দিয়ে আবদ্ধ শহরটির বাসিন্দাদের মূল জীবিকাই হচ্ছে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম বো-হেড তিমি, উত্তর গোলার্ধের মেরু ভালুক, সিল এবং বল্গা হরিণ শিকার। এসব প্রাণীর মাংসও তাদের প্রধান খাদ্য। ভৌগলিক বিচ্ছিন্নতা ও অন্য কোনো বিকল্প না থাকায় আলাস্কাবাসীর হাজার হাজার বছরের এ অভ্যাস ও ঐতিহ্য ত্যাগ করাও সম্ভব নয়।

পরিবেশ দূষণ আলাস্কায় অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ মাত্রায় পৌঁছেছে। তাপমাত্রা সেখানে নিয়মিতভাবে শূন্য ডিগ্রির নিচে থাকে। আর রাসায়নিক দূষণকারী বড় বড় বস্তু বরফের মধ্যে আটকা পড়ে যায়। পুরনো নিষিদ্ধ দূষণকারী পণ্যের মাত্রা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হলেও আধুনিক দূষণকারী পণ্যের সংখ্যা বাড়ছে। বরফে আটকে থাকা পলিক্লোরিনডটেড বাইফিনাইলস্‌ (PCBs) এর মতো রাসায়নিক বো-হেড তিমি, মেরু ভালুক ও সিলের বিভিন্ন অঙ্গে সংক্রমিত হচ্ছে। এগুলো বরফের গভীরে দূষণ করে এবং জুরাসিক পার্কের মধ্যে আটকে থাকা মশাদের মতো পুরোপুরি সংরক্ষিত থেকেই যায়।

মেরু ভালুক মানুষের বিভিন্ন পণ্য বহন থেকে শুরু করে মাংস ও পশমের জন্য সবচেয়ে পছন্দের শিকার। বো-হেড তিমি, সিল আর বল্গা হরিণও নির্বিচারে শিকার করছে মানুষ।  

গত বছর প্রকাশিত একটি গবেষণায় জানা যায়, ১৯৮৭ সাল থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে এসব শিকারের অভ্যন্তরীণ অঙ্গের PCBs উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়ে গেছে।

আর্কটিক জাতির জন্য খনিজ পদার্থ ও ভিটামিন পেতে এখনও সামুদ্রিক স্তন্যপায়ীর মাংস খাওয়া অপরিহার্য, যা পতে তারা অন্য কোনো পথে যেতে হলে তাদেরকে কঠিন সংগ্রাম করতে হবে।

ফলে অনেক মানুষ পিসিবি মেশানো দূষিত মাংস খেয়ে অসুস্থতার ঝুঁকিতে পড়ছেন।  

মেরিল্যান্ডের গেইথারসবার্গের ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ও প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের রসায়নবিদ ও পিসিবি বিষয়ক একটি গবেষণাগ্রন্থের সহ রচয়িতা জেসিকা রেইনার বলেন, পুরনো রাসায়নিক পদার্থ অনেক দশক ধরে নিষিদ্ধ বলে এর মাত্রা সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু স্থানীয়রা প্রাণীদের শরীরে থাকা বিষাক্ত দ্রব্যের কারণে নতুন নতুন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন’।

রেইনার বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি পিসিবি আক্রান্ত কিছু সিলের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গেছে, এর মাংসে মানুষের জন্য ক্ষতিকর উপকরণও অনেক বেশি’।

একটি অলাভজনক অ্যাংকারিজভিত্তিক সংগঠন ২০১৪ সালে আলাস্কার উপজাতীয় বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য ও জীবিকা থেকে পাওয়া খাবারে বিষাক্ততার মাত্রা নিয়ে গবেষণা করে জানায়, তারা টক্সোপ্লাসমোসিস এর মতো প্যারাসাইটের নমুনা পেয়েছেন বল্গা হরিণের মাঝেও। ফলে প্রায় ১০ শতাংশ হরিণের মধ্যে জন্মগত ত্রুটি পাওয়া গেছে। অন্যদিকে এর মাংস থেকে আক্রান্ত হচ্ছেন ব্যারোর ৫০ শতাংশ আদিবাসী।  

বাংলাদেশ সময়: ০১০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৬
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।